ঘোষণা ডেস্ক :জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে দুদকের মামলায় অভিযুক্ত চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি- ক্রাইম) মো. কামরুল হাসান ও তার স্ত্রী সায়মা বেগমের নামে থাকা ১১ কোটি ৩৪ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার (৯ জুলাই) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ বেগম জেবুননেছা এই আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক এমরান হোসেন বলেন, দুদক অনুসন্ধান করে পুলিশ কর্মকর্তা কামরুল হাসান ও তার স্ত্রীর নামে ১১ কোটি ৩৪ লাখ টাকার স্থাবর–অস্থাবর অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে। গত মাসে দুদক প্রধান কার্যালয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় স্থাবর–অস্থাবর সম্পদ যাতে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হস্তান্তর করতে না পারেন, সে জন্য দুদকের পক্ষ থেকে সম্পত্তি ক্রোকের জন্য আদালতে আবেদন করা হয়। পরে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
দুদক সূত্র জানায়, কামরুল হাসান ১৯৮৯ সালে উপ-পরিদর্শক (এসআই) হিসেবে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। পরে পদোন্নতি পেয়ে তিনি হাটহাজারী বাঁশখালীসহ বিভিন্ন থানায় ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গত বছর নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার প্রসিকিউশন হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তাঁকে বদলি করা হয়। তিনি চট্টগ্রাম আদালতের হাজতখানার আসামিদের জন্য সরকারি বরাদ্দের খাবার বিতরণ না করে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বিল উত্তোলন করে নিতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ‘আসামিদের খাবারের টাকা পুলিশের পকেটে’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশের পর পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। কমিটির প্রতিবেদনে আসামিদের খাবারের টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া যায়। কিন্তু কামরুল হাসানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
নগর পুলিশের হিসাব শাখার কয়েকজন কর্মকর্তাকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়। অথচ কামরুল হাসান যে বিল পাঠিয়েছেন, তারা এর অনুমোদন দিয়েছেন।
দুদকের পিপি কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু বলেন, পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল হাসান ও তার স্ত্রী সায়মা বেগমের নামে সম্পদ ক্রোক ও জব্দ না করা গেলে তা হস্তান্তর হয়ে যেতে পারে। পরে রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা সম্ভব হবে না।
তিনি আরও বলেন, ক্রোক হওয়া সম্পত্তি হস্তান্তর করা যাবে না। জব্দকৃত ব্যাংক হিসাবে টাকা জমা দেওয়া গেলেও উত্তোলন করা যাবে না। সেই মর্মে সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রার, এসি ল্যান্ড, বিএসইসি ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংক সমূহের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।