
নিজস্ব প্রতিবেদক :চট্টগ্রামে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দুই ছাত্র নিহতের ঘটনায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদসহ ১২৬ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (১ জুলাই) দুপুরে নগরের কোতোয়ালি থানায় পৃথকভাবে মামলা দুটি করা হয়। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের মৃত দুই নেতাকেও আসামি করা হয়েছে।
এই মামলার বাদী পেশায় ব্যবসায়ী আবদুল মোতালেব। তার ছেলে কাউসার মাহমুদ বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। গত বছরের ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে কাউসার নগরের নিউমার্কেট গোলচত্বরে গুলিবিদ্ধ হন। পরে ১৩ অক্টোবর ঢাকার সিএমএইচে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আলোচনা করে মামলা করতে এত দিন দেরি হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করেন বাদী।
মামলার এজাহারে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা দেবাশীষ গুহ বুলবুলকে ৫৫ নম্বর এবং নগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য অমল মিত্রকে ৫৮ নম্বর আসামি করা হয়। অথচ ২০২৩ সালের ৭ মে অমল মিত্র মারা যান। আর দেবাশীষ গুহ বুলবুল ২০২০ সালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
এই মামলায় সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদ, মহিবুল হাসান চৌধুরী, সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, সাবেক এমপি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, রেজাউল করিমসহ ৯১ জনের নাম উল্লেখ আছে। মামলার এজাহারে দুজন মৃত ব্যক্তির নাম ছাড়াও আরও অসংগতি রয়েছে। বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতাকে দুবার করে আসামি করা হয়েছে। এজাহারে দুবার করে নাম রয়েছে আওয়ামী লীগ চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান, সাবেক কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেবাশীষ নাথ, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান, নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম এবং নগর আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক চন্দন ধরের।
মামলার বাদী নিহতের বাবা আবদুল মোতালেব বলেন, ‘আলোচনা করে মামলাটি করা হয়েছে। মৃত ব্যক্তিকে আসামি করার বিষয়টি আমার জানা নেই।’
আরেক মামলার বাদী হয়েছেন সাহাব উদ্দিন। এতে আওয়ামী লীগের ৩৫ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। এজাহারে বলা হয়, গত বছরের ৫ আগস্ট নগরের লালদীঘি পাড় এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান বাদীর মাদ্রাসাপড়ুয়া ২১ বছর বয়সী নিজাম উদ্দিন।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল করিম বলেন, ‘দুটি মামলার জন্য দুজন বাদী এজাহার দিয়েছেন। এর মধ্যে যদি কোনও মামলায় মৃত ব্যক্তি কিংবা নিরীহ কেউ আসামি হয়ে থাকেন, তাহলে তদন্ত করে বাদ দেওয়া হবে।’