
বিশেষ প্রতিনিধি :চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সিডিএ’র কর্মচারী ও আওয়ামী লীগ নেতা জয়নাল অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে বিলাসী জীবন যাপন করছেন। পরিবার নিয়ে বসবাস করেন মেহেদীবাগের আলিসান ফ্ল্যাটে। জুলাই বিপ্লবে ছাত্র জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকারকে অর্থ যোগানের পাশাপাশি বড় একটা সশস্ত্র গ্রুপ নিয়ে সরাসরি হামলায় অংশ নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
জানা যায়, জয়নাল আবেদীন সিডিএ’র কম্পিউটার অপারেটর হিসাবে কর্মরত আছেন।আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় থাকতে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে সিডিএতে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বাড়ী-গাড়ীসহ অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। এছাড়া তিনি সরকারি বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করে সৌদি আরব-দুবাইসহ বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করে রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে সেখান থেকে অবৈধ উপায়ে স্বর্ণ এনে ভারতে পাচার করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তার অবৈধ টাকায় উপার্জিত সম্পদের বেশীরভাগই স্ত্রীসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নামে। নগরীর অভিজাত এলাকা মেহেদীবাগের ৮০৮/এ নাভানা জালাল প্যালেসে বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে বসবাস করলেও শহরের বিভিন্ন জায়গায় তার আরো ৬-৭টি ফ্ল্যাট ও ৩-৪টি প্লট রয়েছে। বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায় তার স্ত্রীর নামে বিভিন্ন ব্যাংকে বড় বড় এফডিআর রয়েছে ।
সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯-এর বিধি-২৫ (১) অনুযায়ী কোনো সরকারি কর্মচারী রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে পারেন না। কিন্তু তিনি চসিক ১৫ নং বাগমনিরাম ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদের দায়িত্বে রয়েছেন। জুলাই বিপ্লবে ছাত্র জনতার উপর হামলার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ৪-৫টা মামলা হলেও তিনি অজানা কারণে এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিডিএ’র কয়েকজন কর্মকর্তা জানান জয়নাল আওয়ামী সরকারের আমলে এতই প্রভাবশালী ছিলেন যে, তিনি চেয়ারম্যান ব্যতীত কাউকে পাত্তা দিতেন না। এসব কর্মকর্তারা আরো জানান, তিনি সিডিএ’র প্ল্যান অযোগ্য কিছু প্ল্যান পাশ করিয়ে নিতে সিনিয়র প্রকৌশলীদের সাথে অসদাচরণ করে শেষ পর্যন্ত সেসব প্ল্যান পাশ করিয়ে দিতে বাধ্য করেন।
এই ব্যাপারে জানতে জয়নাল আবেদীনের মুঠোফোনে কল করে সাড়া না পেয়ে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি বিজয় টিভির স্টাফ রিপোর্টার হাবীব রেজাকে দিয়ে ফোন করিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন। পরবর্তীতে তার বক্তব্য নেওয়ার জন্য সরাসরি অফিসে গেলে তিনি কোন বক্তব্য দিবেন না বলে ধমকের সূরে অফিস থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।
এই বিষয়ে জানতে সিডিএর সচিবের হোয়াটসঅ্যাপে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।