
ঘোষণা ডেস্ক : আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হলে অক্টোবরে তফসিল ঘোষণা করতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। সোমবার(২৪ ফেব্রুয়ারী) রাজধানীর ইটিআই ভবনে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন ডেমোক্রেসি আরএফইডি’র নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক ও বিদায়ী কমিটির বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। আগামী জুনের মধ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করা সম্ভব নয় এমন ইঙ্গিত দিয়ে সিইসি বলেন, আমাদের টার্গেট ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন। সেই হিসেবে আমাদের প্রায় দুই মাস হাতে সময় রেখে তফসিল ঘোষণা করতে হবে।
আগামী জুনের মধ্যে সব স্থানীয় সরকার নির্বাচন করা সম্ভব স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের এই পর্যবেক্ষণের বিষয়ে এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, সংস্কার কমিশন পরামর্শ দিয়েছে জুনে সম্ভব। সেটি সম্ভব হবে যদি ১৬ লাখ মৃত ভোটারকে বাদ দেওয়া না হয় এবং নতুন ৩৫ লাখ ভোটারকে বাদ দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান করা হয়। ভোটার তালিকা হালনাগাদের কার্যক্রম শেষ হবে আগামী জুন মাসে।
সিইসি মনে করেন, স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন যে বক্তব্য দিয়েছেন এটি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বলেছেন। তারা বিজ্ঞ এবং জ্ঞানী লোকজন, এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। রাজনৈতিক এ বিষয়ে একটি রাজনৈতিক বিতর্ক চলছে। নির্বাচন কমিশন তাতে জড়িত হতে চায় না। আগে ভোটার তালিকা হোক। সিইসি জানান, তারা আগেভাগে কোনো মন্তব্য করতে চান না। প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা অনুযায়ী তারা নির্বাচনের প্রস্তুতি এগিয়ে নিচ্ছেন। আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন হতে হলে অক্টোবরে তফসিল ঘোষণা করতে হবে। তিনি জানান, ভোটার তালিকা তৈরি এবং অন্যান্য প্রস্তুতি তারা নিচ্ছেন। সীমানা নির্ধারণের অনেকগুলো আবেদন ঝুলে আছে। আইনি জটিলতার কারণে তারা নিষ্পত্তি করতে পারছেন না। এই আইন সংশোধন করার জন্য তারা ইতিমধ্যে সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছেন। আরও কিছু বিষয়ে সরকারের কাছে প্রস্তাব দেবে নির্বাচন কমিশন। যদি সংস্কার কমিশন গঠন করা না হতো তাহলেও এটি করতে হতো। নানান ধরনের রিলিফ বা ত্রাণের আশায় অনেক বাংলাদেশি নাগরিক স্বেচ্ছায় রোহিঙ্গা হয়েছেন। কক্সবাজার এলাকায় বাড়ি বাড়ি ভোটার তালিকা করতে গিয়ে এমন তথ্য পেয়েছেন বলে জানিয়ে সিইসি বলেন, আমরা রোহিঙ্গাদের ঠেকানোর চেষ্টা করছি। স্থানীয় অনেকে রোহিঙ্গা হয়েছে রিলিফের আশায়। স্বেচ্ছায় রোহিঙ্গা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বিয়ে হচ্ছে। অনেক সময় স্বামী রোহিঙ্গা, স্ত্রী বাংলাদেশি। আবার স্ত্রী বাংলাদেশি, স্বামী রোহিঙ্গা। এমন তথ্য আমরা পাচ্ছি। সিইসি আরও বলেন, সুন্দর ভোটের জন্য ভোটার লিস্ট স্বচ্ছ করা দরকার। প্রায় ১৭ লাখ মৃত ভোটার তালিকায়। ওরাই কবর থেকে ভোট দিয়েছে। কবরবাসীও ভোট দিত। মৃত ভোটার আমাদের ধারণার বাইরে ছিল। অন্যদিকে ৩৬ লাখ ভোটার হতে পারে, এমন ব্যক্তিকে ভোটার করা হয়নি। এগুলো বাদ পড়ে যেত।
সাংবাদিকদের সংগঠনগুলোতে সঠিক ভোট হয় জানিয়ে সিইসি বলেন, যদি সাংবাদিকদের মতো নির্বাচন করতে পারতাম, ভালো হতো। সাংবাদিকদের সংগঠনের ভোটে কোনো ঝামেলা নাই, কারচুপি নাই, অভিযোগও নাই। আমরা অবাধ তথ্যপ্রবাহ চাই। এ এম এম নাসির উদ্দিন জানান, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যেসব সংস্কার দরকার বলে কমিশন মনে করে সেটুকু করার উদ্যোগ তারা নিয়েছেন। বিদ্যমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা সম্ভব কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, তারা মনে করছেন ডিসেম্বর আসতে আসতে এই পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে। সবার সহযোগিতা নিয়ে তারা এমন একটি জোয়ার সৃষ্টি করবেন যেখানে ভোট ছাড়া মানুষের আর কোনো চিন্তা থাকবে না।