
ঘোষণা ডেস্ক :স্থানীয়দের সঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা ও জিডি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের আহত হওয়ার ঘটনায় ৯৫ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। এতে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে এক হাজার জনকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার আবদুর রহিম বাদী হয়ে মঙ্গলবার দুপুরে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ৩০ আগস্ট রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেইট সংলগ্ন জোবরা গ্রামে প্রথম দফা হামলার ঘটনা ঘটে। পরদিন ৩১ আগস্ট সকাল সাড়ে ১১টার দিকে একই এলাকায় আবারও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘবদ্ধভাবে হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা হত্যার উদ্দেশ্যে শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ করে গুরুতর জখম করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তিরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়, যার পরিমাণ প্রায় ৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকা বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় দণ্ডবিধির ১৪৩, ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯, ৩২৩, ৩২৪, ৩২৫, ৩২৬, ৩০৭, ৪২৭, ৫০৬(২) ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। হাটহাজারী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু মাহমুদ কাওসার হোসেন জানান, মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে।
এদিকে সংঘর্ষ চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা দপ্তর থেকে দেশীয় অস্ত্র লুটের ঘটনাও ঘটেছে। ৩১ আগস্ট দুপুরে শিক্ষার্থী ও জোবরা এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষের সময় উত্তেজিত একটি অংশ নিরাপত্তা দপ্তরে প্রবেশ করে সংরক্ষিত অস্ত্র নিয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর আবাসিক হল থেকে জব্দ করা প্রায় ১৬০টি রামদার মধ্যে প্রায় ১৩০টি লুট হয়েছে।
সহকারী প্রক্টর নাজমূল হোসাইন বলেন, ‘অস্ত্রাগারের ছয়টি তালা ভাঙা হয়েছে। আমাদের নিরাপত্তা কর্মীরা মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। এমনকি অনুরোধ করার পরও অস্ত্র লুট ঠেকানো যায়নি। এই অস্ত্র একসময় শিক্ষার্থীদের জন্যই বুমেরাং হয়ে দাঁড়াতে পারে।’
অস্ত্র উদ্ধারে কঠোর অবস্থান নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যাদের কাছে এসব অস্ত্র রয়েছে, তাদেরকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিরাপত্তা দপ্তরে জমা দিতে হবে। অন্যথায় কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, “অস্ত্র লুটের ঘটনায় হাটহাজারী থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। বাদী হিসেবে নিরাপত্তা দপ্তরের প্রধান আবদুর রহিম রয়েছেন। মামলায়ও তিনিই বাদী।”