শিরোনাম
Home / অপরাধ / ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিতর্কিত পরিচালক তৌহিদুল ইসলামের অপসারণের দাবীতে মানববন্ধন

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিতর্কিত পরিচালক তৌহিদুল ইসলামের অপসারণের দাবীতে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক :ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আগারগাঁও প্রধান কার্যালয়ের সাবেক পরিচালক তৌহিদুল আনোয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের সুবিধাভোগী হিসেবে পরিচিত এই কর্মকর্তা একাধিক ফৌজদারি মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি। রয়েছে ঘুষ-দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার তাকে বরিশালের আঞ্চলিক অফিসে বদলি করা হয়েছে। তবে শুধু বদলি নয়, তাকে চাকরি থেকে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সচেতন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

বুধবার (২ জুলাই) আগারগাঁও প্রধান কার্যালয় ও বায়তুল মোকাররম কার্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

বক্তারা বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত ও পদোন্নতিপ্রাপ্ত, একাধিক ফৌজদারি মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি, দুর্নীতিবাজ ও ধর্ষণে সহযোগী হিসেবে পরিচিত তৌহিদুল আনোয়ারকে শুধু বদলি নয়, চাকরি থেকে অপসারণ ও তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে চাকুরী থেকে অপসারণ করতে হবে। এছাড়া কীভাবে তৌহিদুল আনোয়ার একাই ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গুরুত্বপূর্ণ ৬টি পদ দখল করেন তার কারণ উদঘাটনসহ তার অপকর্মও দুর্নীতির তদন্তে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি করারও দাবি তুলেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তৌহিদুল ইসলামের কর্মকাণ্ডের কারণে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের শৃঙ্খলা, ভাবমূর্তি ও কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে প্রায় এক ডজন অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগের যথাযথ তদন্ত করে তাৎক্ষণিক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি উঠেছে।

কর্মকর্তারা বলছেন, তৌহিদুল আনোয়ার দীর্ঘদিন ধরে ইসলামিক ফাউন্ডেশনে দায়িত্ব পালনের আড়ালে এক ধরনের অনৈতিক কর্তৃত্ব ও দুর্নীতির সংস্কৃতি গড়ে তোলেন। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আরেফিন সিদ্দিকীর প্রত্যক্ষ শিষ্য ও আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত। ছাত্রলীগ নেতা ও ফাউন্ডেশনের সাবেক ডিজি শামিম আফজালের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় তিনি বছরের পর বছর ফাউন্ডেশন থেকে ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক সুবিধা আদায় করেন। এছাড়া তৌহিদুল আনোয়ারের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের আদালতে একটি ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন রয়েছে এবং সেই মামলায় চার্জ গঠনও সম্পন্ন হয়েছে। অথচ তিনি এখনো কীভাবে সরকারি চাকরিতে বহাল রয়েছেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, ফাউন্ডেশনের অভ্যন্তরে কর্মকর্তাদের মধ্যে গ্রুপিং, ষড়যন্ত্রমূলক আচরণ ও মব কালচারের পরিবেশ তৈরি করেন এই পরিচালক। মহাপরিচালকের স্বাধীনভাবে কাজে তিনি নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন এবং বদলি ও প্রমোশনের ক্ষেত্রেও তার অপপ্রভাব ও চক্রান্ত স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান বলেও জানান তারা।

ফাউন্ডেশনের অধীনে পরিচালিত রাজধানীর মাতুয়াইলের একটি মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ আব্দুর রহিম, আনোয়ারুল ইসলামসহ মানববন্ধনে অংশ নেওয়া একাধিক শিক্ষক বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে তৌহিদুল ইসলাম রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আমাদের ৪০-৫০ জন শিক্ষকের বেতন-ভাতা বন্ধ করে দেন। তার অনিয়ম-দুর্নীতিতে আমরা অতিষ্ঠ ছিলাম। আজ দেড়-দুই বছর আমাদের বেতন বন্ধ। পট পরিবর্তনের পরে সে পালিয়ে গেছে। আমরা তার কঠিন শাস্তি দাবি করছি। পাশাপাশি আমাদের বেতন-ভাতা চালু করার দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সচিব মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন জানান, ইফার উপসচিব তৌহিদুল আনোয়ারকে গত ৩০ জুন বরিশালে তাৎক্ষণিক বদলি (স্ট্যান্ড রিলিজ) করা হয়েছে। তাঁর বদলির প্রতিবাদে মঙ্গলবার তাঁর অনুসারী কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তি মানববন্ধন করেছিলেন। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার গণশিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষকেরা বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন, যেখানে কর্মচারীরাও অংশ নেন। সচিব আরও জানান, তৌহিদুল আনোয়ারের বিরুদ্ধে মামলাও রয়েছে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপসচিব তৌহিদুল আনোয়ার জানান, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে গণশিক্ষার কিছু শিক্ষক এই মানববন্ধন করেছেন। তিনি নিজেও ১৬ বছর ধরে বঞ্চনার শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেন। শিক্ষকদের বেতন বকেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, গত ১৫ দিন ধরে তিনি আর প্রকল্প পরিচালকের পদে নেই। তিনি জানান, শিক্ষকদের বেতন ছাড় হয়েছে এবং কিছু দিনের মধ্যেই তাঁরা বেতন পেয়ে যাবেন।

Check Also

‘মব ভায়োলেন্স এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি’হলে কঠোর পদক্ষেপ নেবে সেনাবাহিনী

ঘোষণা ডেস্ক :ভবিষ্যতে জানমালের ক্ষতিসাধন, মব ভায়োলেন্স এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করতে পারে, এমন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে …