শিরোনাম
Home / অনুসন্ধান / চট্টগ্রামে ডিবির কথিত সোর্স জামালের খুঁটির জোর কোথায়?

চট্টগ্রামে ডিবির কথিত সোর্স জামালের খুঁটির জোর কোথায়?

নিজস্ব প্রতিবেদক :চট্টগ্রামে থানা পুলিশ এবং ডিবির সোর্স পরিচয়ে কতিপয় অপরাধী দাপটের সাথে তাদের অপকর্ম চালিয়ে গেলেও অজানা কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন। যদিও প্রশাসনের দাবী সোর্সের কোন অপকর্ম সহ্য করা হবে না। চট্টগ্রামে মো: জামাল তথা ইয়াবা জামাল নামে এক সোর্সের দাপটে অসহায় দিনযাপন করছেন অনেক ব্যবসায়ী। সিএমপির কতিপয় অসাধু পুলিশ কর্মকর্তার সাথে সখ্যতা থাকার সুবাদে তিনি নানা অপকর্ম করেও পার পেয়ে যাচ্ছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, কুমিল্লার হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান মো: জামাল প্রকাশ ইয়াবা জামাল নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য ১৯৯৮ সালে চট্টগ্রাম শহরে পাড়ি জমান। চট্টগ্রামে এসে কিছুদিন তিনি রিকশা চালিয়ে জীবীকা নির্বাহ করলেও রঙ্গিন স্বপ্নের মোহ তাকে নিয়ে যায় অন্ধকার জগতে। বছর দুয়েক পার হতেই ধীরে ধীরে জড়িয়ে পড়েন মাদক কারবারে। মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে থেকে বহনকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন, কয়েকবার পুলিশের জালে ধরা পড়লেও মাদক ব্যবসায়ীরা তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যেতো, এতে জামালের সাথে পুলিশের সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। অসাধু কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা তাকে সোর্স হিসেবে কাজ করার প্রস্তাব দিলে তিনি সেই প্রস্তাবে রাজি হয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের কয়েকটি বড় চালান পুলিশকে ধরিয়ে দিয়ে গুণতে থাকে বড় অংকের কমিশন। তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০১০ সালের দিকে তিনি চট্টগ্রাম শহরে কোটিপতি জামাল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। অবৈধ আয়ের টাকায় কুমিল্লার গ্রামের বাড়ীতে গড়েন বিলাসবহুল বাড়ী, নামে-বেনামে কিনেন অঢেল সম্পদ। ধীরে ধীরে কাজের পরিধি বাড়িয়ে দু’হাতে অর্থ উপার্জন করতে থাকেন তিনি। থানা পুলিশ এবং ডিবির সীমা ছাড়িয়ে র‍্যাব, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এবং কোস্টগার্ডের সাথেও কাজ শুরু করে জামাল।

আরো জানা যায়, মাদক উদ্ধার অভিযানে প্রশাসনের টিমের সাথে সরাসরি জড়িত থেকে অনেক লঙ্কাকাণ্ড করেন এই জামাল। দফারফা করে ইয়াবা বহণকারীকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করে টিমকে জানিয়ে দেয় তথ্য সঠিক না, এছাড়া ইয়াবা চুরিতেও পটু এই জামাল। অনেক সময় টিমের সদস্যরা তাকে বহণকারীর দেহ তল্লাশির দায়িত্ব দিলে তিনি আড়ালে নিয়ে তল্লাশির সময় ইয়াবা সরিয়ে নিজের কোমরে থাকা বিশেষ বেল্টে মজুদ করে।

আরো জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা পালিয়ে গেলে তাদের বাড়ীঘরে থাকা অবৈধ টাকা ও সম্পদ লুটপাটের জন্য জামাল একটি টিম গঠন করে পুলিশ পরিচয়ে বিপুল নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করেন। জামালকে প্রায় সময় প্রশাসনের টিমের সাথে দেখা যাওয়ার কারণে লোকজন বুঝতে পারে না তার সাথে থাকা টিমের সদস্যরা আসল পুলিশ নাকি ভুয়া পুলিশ।

এই বিষয়ে জামালের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রশাসনের স্যারেরা তাকে পছন্দ করেন তাই মাঝেমধ্যে ডাকলে গিয়ে টুকটাক তথ্য প্রদান করে সহযোগিতা করেন। তিনি প্রফেশনাল সোর্স না। এসময় জামাল দম্ভ করে বলেন, চট্টগ্রামে শহরে আছেন ৩০ বছর হলো তার বিরুদ্ধে কোথাও একটি জিডি পর্যন্ত নেই।

জামালের এই অপকর্মের ব্যাপারে জানতে চাইলে সিএমপির কয়েকজন উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এই ব্যক্তিকে নজরদারির জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালনাকারী বিভিন্ন সংস্থার টিমকে সতর্ক করা হবে। তার গতিবিধি নজরদারি করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও জানান কর্মকর্তারা।

➡️আগামীতে প্রকাশিত হবে জামালের ছদ্মবেশে ইয়াবা ব্যবসায়ী সাজার কৌশল এবং কাটিং ও ফিটিং বাণিজ্য নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন।

Check Also

ফটিকছড়িতে বলাৎকারের অভিযোগে ৩ মাদ্রাসা শিক্ষক কারাগারে

ঘোষণা ডেস্ক : ফটিকছড়ি সদরে একটি প্রাইভেট মাদ্রাসায় ১২ বছর বয়সী এক শিশুকে বলাৎকারের অভিযোগ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *