
ঘোষণা ডেস্ক : চাঁদপুরে সদরে মামাতো দুই ভাই-বোনকে দেখাশোনার জন্য বাড়িতে রাখা এক তরুণীকে নির্যাতনের অভিযোগে ওই তরুণীর মামা ও মামিকে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার(৭ মার্চ) চাঁদপুর আমলি আদালতের বিচারক তাদের ২ জনকেই কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
নির্যাতনের শিকার রোজিনা সদর উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের বাসিন্দা। তাকে চাঁদপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আসামিরা হলেন, ভুক্তভোগীর মামা রুবেল মোল্লা ও তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই পিন্টু দত্ত।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে শহরের মাদ্রাসা সড়কের মোল্লা বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় ওই তরুণীকে উদ্ধার করা হয় বলে জানান চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি মো. বাহার মিয়া।
রোজিনার বাবা বাদী হয়ে প্রধান আসামি মামী রোকেয়া বেগম ও দ্বিতীয় আসামি মামা রুবেলের বিরুদ্ধে শিশু নির্যাতনে মামলা দায়ের করেন।
ওই সড়কের বাসিন্দা কলেজ শিক্ষার্থী মোরশেদ আলম ও ফরহাদ হোসেন জানান, রাস্তার পাশে ২০ বছরের ওই তরুণীকে কান্না করতে দেখে কারণ জিজ্ঞাসা করেন তারা। উত্তরে ওই তরুণী তাদের জানান, মামার বাসা থেকে তিনি পালিয়ে এসেছেন। পরে তারা বিষয়টি পুলিশকে জানান।
খবর পেয়ে সদর থানার এএসআই কাউসার ওই তরুণীকে উদ্ধারের পাশাপাশি রুবেল মোল্লা ও রোকেয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।
নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী বলেন, ৬ মাস আগে মামাতো ভাই-বোনকে দেখাশোনার জন্য আমাকে আনা হয়। বাড়িতে কাজ করার সময় কারণে-অকারণে মামি আমাকে মারধর করতেন। কোনো ভুল হলেই গালমন্দ করতেন। কাজ করলে ভুল হতে পারে। আমাকে পুতা, কাঠ ও দা দিয়ে পিটিয়ে জখম করেন মামি। চার মাস এভাবে মারধর করা হয়। মামা কয়েকবার ওষুধ এনে দিয়েছে, কিন্তু জখম ভালো হয় না।
ঘটনাটি জেনে থানায় যান ওই তরুণীর বাবা আলী আহম্মদ ভুঁইয়া। মেয়েকে নির্যাতনের চিত্র দেখে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
তিনি বলেন, আমার মেয়ে এমন নির্যাতনের শিকার আমি জানতাম না। সে ঢাকায় আমার বড় মেয়ের কাছে ছিল। আমাকে না জানিয়ে সেখান থেকে তাকে রুবেলের বাসায় নেওয়া হয়। আমি মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য বললে, পরে নিয়ে আসব বলত। রোকেয়া আমার মেয়েকে এমন নির্যাতন করেছে কেউ না দেখলে বিশ্বাস করবে না। এই নিষ্ঠুর মহিলার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করি।