শিরোনাম
Home / অপরাধ / চট্টগ্রামে আইনজীবী খুনের মামলায় চন্দন-রিপন রিমান্ডে

চট্টগ্রামে আইনজীবী খুনের মামলায় চন্দন-রিপন রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক :চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ খুনের মামলায় প্রধান আসামিসহ ২ জনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মহানগর হাকিম কাজী শরিফুল ইসলামের আদালত এ আদেশ দেন।

এর আগে পুলিশ উভয় আসামিকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া দুই আসামি হলেন- চন্দন দাস (৩৫) ও রিপন দাস (২৭)।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি মফিজুল হক ভূঁইয়া।

তিনি বলেন, আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার প্রধান আসামি চন্দন দাসের ৭ দিন এবং তদন্তেপ্রাপ্ত অপর আসামি রিপস দাসের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন জানান, আইনজীবী আলিফ খুনের মামলায় আসামি চন্দন ও রিপনকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত চন্দন দাসের ৭দিন ও রিপন দাসের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

নিহত আইনজীবী আলিফের বন্ধু অ্যাডভোকেট মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী বলেন, আমি আমার প্রিয় বন্ধু আলিফ হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ বিচার চাই। আমার বন্ধুকে তারা দিনে-দুপুরে নৃশংসভাবে খুন করেছে। পুলিশকে অনুরোধ করবো বাকি আসামিদেরও যেন দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়।

এর আগে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দুই আসামি চন্দন দাস ও রিপন দাসকে আদালতে হাজির করা হয়। সকাল থেকেই পুরো আদালত চত্বর ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আদালত রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করার পর হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে আদালত ভবনে স্লোগান দিতে থাকেন অন্যান্য সাধারণ আইনজীবীরা। এ সময় তারা হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকনকেও নিষিদ্ধের দাবি জানান।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) ভোরে কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ খুনের প্রধান আসামি চন্দন দাসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এদিন সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের আনোয়ারা থেকে আরেক আসামি রিপন দাসকে গ্রেফতার করা হয়। রিপন এজাহারনামীয় আসামি না হলেও ভিডিও ফুটেজ দেখে তাকে হত্যা মামলার আসামি হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ৫২ সেকেন্ডের ভিডিও ফুটেজে সেদিন রঙ্গম কনভেনশন হল গলিতে কমলা রঙের টি-শার্ট ও কালো প্যান্ট পরিহিত চন্দনকে ছুরি এবং নীল রঙের টি-শার্ট ও জিন্সের প্যান্ট পরিহিত রিপনকে বটি হাতে সাইফুলকে কোপ দিতে দেখা যায়। এসময় চন্দনের মাথায় সিলভার এবং রিপনের মাথায় লাল হেলমেট ছিল।

উল্লেখ্য, গত ২৫ নভেম্বর চট্টগ্রামে ফেরার পথে শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীকে তুলে নিয়ে যায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরদিন তাকে নগরের কোতোয়ালী থানায় হওয়া একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করেন।

এর পরে চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজনভ্যানে তোলা হয়। তখন তার অনুসারীরা প্রিজনভ্যান আটকে দেন। তারা এ সময় প্রায় তিন ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) লাঠিপেটা করে ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে চিন্ময় কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সংঘর্ষ হয়। পরে চট্টগ্রাম আদালত ভবনে প্রবেশপথের বিপরীতে রঙ্গম সিনেমা হল গলিতে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে আদালত এলাকায় সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও পুলিশের কাজে বাধাদানের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ৩টি মামলা দায়ের করে।

এছাড়া আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের বাবা বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা এবং ভাই খানে আলম বাদী হয়ে যানবাহন ভাঙচুর ও জনসাধারণের উপর হামলার ঘটনায় ১১৬ জনকে আসামি করে বিস্ফোরক আইনে আরেকটি মামলা করেন নগরের কোতোয়ালী থানায়।

Check Also

অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেমাই উৎপাদন, চাক্তাইয়ে ৪ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেদক :অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেমাই উৎপাদন ও খোলা রোদে শুকানোসহ বিভিন্ন অপরাধে চট্টগ্রাম নগরের চারটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *