
ঘোষণা ডেস্ক :নিয়োগলাভের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারএ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, ‘গত ১৫ বছর ধরে কত লোক প্রাণ দিলো। শুধু জুলাই-আগস্টেই দেড় হাজার লোক শহীদ হলো। ২৫ থেকে ২৬ হাজার লোক আহত হলো। এদের রক্তের সঙ্গে, ত্যাগের সঙ্গে বেঈমানি করা যাবে না। একটা ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল ইলেকশন জাতিকে উপহার দিতে সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করবো।’
গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের রক্ত ও ত্যাগের সঙ্গে বেঈমানি করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন।
বৃহস্পতিবার(২১ নভেম্বর) নতুন সিইসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন।
নতুন সিইসি বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যা যা করা দরকার, তা করবো ইনশাআল্লাহ্। এই দায়িত্ব যখন এসেছে, তখন আমাদেরকে তা সুষ্ঠুভাবে পালন করতে হবে। এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।’
এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, ‘আমাদের দেশে নির্বাচনটা একটা বিশাল চ্যালেঞ্জ। অতীতেও ছিল, বর্তমানেও রয়েছে। গত তিনটি নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে।’
বর্তমান পরিস্থিতি আরো অন্যরকম মন্তব্য করে সিইসি বলেন, ‘বিশাল এক গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন একটা অবস্থা দাঁড়িয়েছে। গত ১৫ বছর ধরে কত লোক প্রাণ দিলো, কত লোক আহত হলো, কত লোক নিহত হলো, কত লোক গুম হলো। কত মানুষের সম্পদ হারালো, স্বামী স্ত্রী হারাল, স্ত্রী স্বামী হারাল এবং ছেলে বাবাকে হারাল, বাবা ছেলেকে হারাল।’
তিনি বলেন, ‘শুধু জুলাই-আগস্টেই দেড় হাজার লোক শহীদ হলো। ২৫ থেকে ২৬ হাজার লোক আহত হলো। এদের রক্তের সঙ্গে, ত্যাগের সঙ্গে বেঈমানি করা যাবে না। কোনোভাবেই করা যাবে না। একটা ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল ইলেকশন জাতিকে উপহার দেয়ার জন্য আমার সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করব।’
নতুন সিইসি বলেন, ‘যার ভোট সে দেবে- এটা অবশ্যই সম্ভব হবে। আমি তথ্য, জ্বালানি ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলাম। এই তিন চ্যালেঞ্জিং মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলেছি, ইনশাআল্লাহ এই চ্যালেঞ্জও সামলে নেব।
‘যত চ্যালেঞ্জই আসুক সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা নিয়ে ওই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। জীবনে কোনোদিন ফেল করিনি। আশা করি ফেল করবো না। এই আত্মবিশ্বাস আমার আছে।’
প্রসঙ্গত, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চার কমিশনার নিয়োগ দিয়ে বৃহস্পতিবার পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। রাষ্ট্রপতি এ নিয়োগ দিয়েছেন বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।
চার কমিশনার হিসেবে থাকছেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ আবদুর রহমানেল মাসুদ, সাবেক যুগ্ম-সচিব তহমিদা আহমদ এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
দেশের চতুর্দশ সিইসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া নাসির উদ্দীন সাবেক সচিব। অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি তাকে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব দেয়। এবার তাকে দেয়া হলো নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব।
সিইসি নাসির উদ্দীনের বাড়ি কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে পড়াশোনা করে তিনি পেশাজীবন শুরু করেন শিক্ষক হিসেবে। পরে বিসিএস ৭৯ ব্যাচে তিনি সরকারি চাকরিতে যোগ দেন।
সাবেক এই আমলা ২০০৪ সালে তথ্য সচিব, এরপর জ্বালানি সচিব, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।