
নিজস্ব প্রতিবেদক :দায়িত্ব নিয়েই ঠিকাদারদের কঠিন বার্তা দিলেন দিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘চট্টগ্রাম নগরীর অবকাঠামোগত সক্ষমতার সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন জড়িত। এজন্য প্রকৌশল কাজের মান বাড়াতে হবে। ঠিকাদাররা যেসব নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করছে তা পরীক্ষা করে নিতে হবে। কেউ নিম্নমানের কাজ করলে বিল দেব না। যে সমস্ত সড়ক ভেঙে গেছে সেগুলো সংস্কারের দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে।’
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) নগরীর টাইগারপাসের চসিক কার্যালয়ে সংস্থাটির প্রকৌশল বিভাগ ও রাজস্ব বিভাগের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মেয়র এসব কথা বলেন।
একই সঙ্গে গৃহকর খেলাপিদের ছাড় না দেওয়ার কথা বলেছেন মেয়র। তিনি নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডের প্রতিটি ওয়ার্ডের শীর্ষ ১০০ জন করে গৃহকর খেলাপির তালিকা করার নির্দেশ দিয়েছেন। ১ সপ্তাহের মধ্যে এই তালিকা জমা দেওয়ার জন্য কর্মকর্তাদের বলে দিয়েছেন মেয়র।
মেয়র বলেন, ‘আমি রোববার থেকে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে যাব। গৃহকর খেলাপিদের বকেয়া গৃহকর দিতে বলব। কেউ আর্থিক সঙ্কটে থাকলে আলাদা বিষয়, তবে কেউ গায়ের জোরে কর না দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’
নাগরিকদের কর প্রদান সহজ করার উদ্যোগ নিতে হবে জানিয়ে মেয়র আরও বলেন, ‘চসিকের যে সমস্ত মার্কেট আছে, হাট-বাজার-ঘাট আছে সেগুলো থেকেও রাজস্ব আদায় নিশ্চিত করতে হবে। কোথাও কোনো মামলা থাকলে জানাবেন, সেগুলোও নিষ্পত্তি করতে উদ্যোগ নিব। হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানোর পরিবর্তে যারা কর দিচ্ছে না তাদের কাছ থেকে কর আদায় নিশ্চিত করতে হবে। কর প্রদান অটোমেশনের মাধ্যমে নাগরিকদের কর প্রদান সহজ করতে হবে।’
চসিকের আয় বাড়াতে জোর দিয়ে মেয়র বলেন, ‘প্রতিদিন যে বিপুল পরিমাণ বর্জ্য সংগ্রহ করা হয় সেগুলো থেকে সার উৎপাদন করে আয় করা যায় কিনা তা ভেবে দেখতে হবে। এজন্য সংগৃহীত বর্জ্য থেকে পচনশীল জৈব পদার্থগুলোকে আলাদা করতে হবে। এরপর সেই সংগৃহীত জৈব পদার্থ থেকে সার উৎপাদন করা সম্ভব। এছাড়া যে সমস্ত মেডিকেল বর্জ্য সংগ্রহ করা হয় সেগুলোকে প্রক্রিয়া করে প্লাস্টিকের দানায় রূপান্তর করে বিক্রি করে আয় বাড়ানো সম্ভব। এছাড়া সিটি করপোরেশনের যে সমস্ত স্থাপনা থেকে আয় আসা সম্ভব সেগুলোকেও কাজে লাগাতে হবে।’
নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বর্জ্যের বিন নিশ্চিত করতে হবে জানিয়ে মেয়র আরও বলেন, ‘প্রয়োজনে ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরিমানা থেকে শুরু করে ট্রেড লাইসেন্স বাতিলে যা করা প্রয়োজন তা করতে হবে।’
বারইপাড়া খাল প্রকল্প দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দেন মেয়র বলেন, ‘নগরীর জলাবদ্ধতা দূর করার ক্ষেত্রে বারইপাড়া খাল প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ প্রকল্প শেষ না হওয়ায় জনগণ খুব কষ্টে আছেন। দ্রুত এ প্রকল্পটি শেষ করতে হবে। নগরীতে সড়ক আলোকায়ন বাড়াতে হবে। নগরবাসীর অন্যতম প্রধান অভিযোগ সড়কে বাতি না থাকা। সড়কে আলোকায়ন নিশ্চিত করতে হবে, ব্যবহার করতে হবে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বাতি। এ সময় প্রধান প্রকৌশলীকে কর্মীদের প্রশিক্ষণ প্রদানের নির্দেশ দেন মেয়র।