শিরোনাম
Home / রাজনীতি / কোটা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী: আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর অধিকার আমার নেই 

কোটা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী: আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর অধিকার আমার নেই 

ঘোষণা ডেস্ক : চলমান কোটা আন্দোলন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আমার দাঁড়ানোর কোনো অধিকার নেই। তারা আদালতে যাক, কথা বলুক।

সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক প্রশ্ন রাখেন, যারা কোটা বিরোধী আন্দোলন করছেন তারা সব সমাধান আপনার কাছে চান। তারা আদালতের কাছে যেতে চান না। নির্বাহী বিভাগের প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা রাখবেন কি রাখবেন না?

এর জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আমার দাঁড়ানোর কোনো অধিকার নেই। তারা আদালতে যাক, কথা বলুক। না, তারা রাজপথেই সমাধান করবে। সত্যি কথা বলতে, যখন আদালতে চলে গেছে, তার যখন রায় হয়েছে, রায়ের বিরুদ্ধে আমার দাঁড়ানোর তো কোনো অধিকার নেই। সংবিধান তো এ কথা বলে না। পার্লামেন্ট বলে না, কার্যপ্রণালী বিধিও বলে না, কিছুই না।

যতক্ষণ পর্যন্ত আদালত থেকে রায় না আসবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কিছু করার থাকে না। এটাই বাস্তবতা। বাস্তবতা তাদের মানতে হবে। আর যদি না মানে, তাহলে কিছু করার নেই। রাজপথে আন্দোলন করছে, করতেই থাকবে। তবে কোনো ধ্বংসাত্মক কাজ করতে পারবে না। যতক্ষণ তারা শান্তিপূর্ণভাবে করে যাচ্ছে, কেউ কিছু বলবে না। এর বাইরে যখন কিছু করবে, পুলিশের গায়ে হাত দেওয়া, পুলিশের গাড়ি ভাঙা এগুলো যদি করতে যায় তখন আইন তার আপন গতিতে চলবে। এখানে আমাদের কোনো কিছু করার নেই। কোটা আন্দোলন করার আগে তাদের পরীক্ষার রেজাল্টগুলো দেখে নেওয়া দরকার ছিল। কোথায় তারা দাঁড়িয়েছে।

তিনি বলেন, এবার ফরেন সার্ভিসে মাত্র দুইজন মেয়ে চান্স পেয়েছে। পুলিশ সার্ভিসের মাত্র চারজন মেয়ে চান্স পেয়েছে। নারী অধিকারের কথা বলি, সব ধরনের ব্যবস্থা রেখেছি। মুক্তিযুদ্ধের পরে জাতির পিতা নারীদের জন্য ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা রেখেছেন। আমি যখন সরকারে আসি, তখন বলেছি ৩০ শতাংশ যদি পূর্ণ না হয় বা যে কোটাটা পূর্ণ না হবে, সেখানে যারা পরবর্তীতে তালিকায় থাকবে তাদের ভেতর থেকে নিয়োগ দেওয়া হবে। সেটাই কিন্তু আমরা শুরু করে দিয়েছিলাম। তারপরে যখন আন্দোলন শুরু হলো, সব বন্ধ করলাম। বন্ধ করার পরে আজকে ফলাফলটা কি দাঁড়াচ্ছে?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা জিনিস আমি বুঝি না। আমাদের দেশের নারীরা কোনো দিন সেক্রেটারি হবে ভাবিনি, ডিসি হবে ভাবিনি, ওসি হবে ভাবিনি, এমনকি তাদের কোথাও পদায়নও ছিল না। আমি সরকার আসার পরে প্রথম সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী প্লাস পুলিশে চাকরি দিয়ে দিয়েছি। প্রশাসনের ক্ষেত্রে প্রথম সচিব কিন্তু আমি করি। এরপরে প্রথম ডিসি, এসপি, ওসি সমস্ত জায়গায় যেন নারীদের একটা অবস্থান থাকে, সেটা আমরা নিশ্চিত করি। পড়াশোনার ক্ষেত্রে জাতির পিতা শুরু করলেন নারীদের অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত অবৈতনিক করা হলো, সেটাকে টুয়েলভ ক্লাস পর্যন্ত অবৈতনিক করেছি। পার্লামেন্টে কিন্তু মেয়েদের জন্য আলাদা সিট রাখা হয়েছে, সংরক্ষিত আসন। যেন নারী নেতৃত্ব গড়ে ওঠে।

তিনি বলেন, নারীদের সুযোগগুলো সৃষ্টি করেছি কেন, যাতে করে অর্থনৈতিকভাবে তারা স্বাবলম্বী হতে পারে, নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, সেই সময় যারা আন্দোলন করেছিল তার মধ্যে অনেক মেয়েরাও ছিল। তারা বলেছিল কোটা চাই না। যিনি বলেছেন, নারী কোটা দিয়ে চাকরি চাই না, মেধা দিয়ে চাকরি করব। তিনি কি চাকরি পেয়েছেন? সে কি বিসিএস পরীক্ষা দিয়েছে? নারীদের কি সে জায়গা করতে পেরেছেন? কথাগুলো যদি তখন না বলত, তাহলে তো কোটা হিসেবে তারা চাকরিটা পেত?

সরকারপ্রধান বলেন, মুক্তিযোদ্ধার নাতি ভর্তি হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ইউনিভার্সিটিতে। উনিও বলেন, কোটা থাকবে না। তাহলে বাবা তুই চলে আয়, তোর পড়াশোনার দরকার নেই। তুই মুক্তিযোদ্ধার নাতি হিসেবে কোটায় ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে এখন বলছিস কোটা লাগবে না। তকে তো ইউনিভার্সিটি থেকে বের করে দেওয়া উচিত। তর কোটা নেই, তোর পড়াশোনাও নেই। বাড়ি গিয়ে বসে থাক। যদি লজ্জা থাকত তাহলে ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা বন্ধ করে দিয়ে এসে বলুক, কোটা লাগবে না। বিচিত্র এই দেশ। বিচিত্র মানসিকতা। ছয় ঋতুর দেশ তো; ঋতুও বদলায়, মনও বদলায়। আমার কিছু করার নেই।

Check Also

চট্টগ্রাম আদালতের ১,৯১১ মামলার নথি গায়েব, থানায় জিডি

নিজস্ব প্রতিবেদক :চট্টগ্রাম আদালতের ১ হাজার ৯১১টি মামলার নথির (কেস ডকেট বা সিডি) খোঁজ পাওয়া …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *