ঘোষণা ডেস্ক :একটি পরকীয়া ১০টি খুনের চেয়ে খারাপ বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। এ ধরনের কর্মকাণ্ড যারা করে বা চেষ্টা করে, তারা খুনিদের মতোই অপরাধ করে। হাইকোর্ট কোনোভাবেই এমন অপরাধের প্রশ্রয় দিতে পারে না।
ঢাকার রবিনের সঙ্গে মাগুরার এক ডিভোর্সি নারীর ফেসবুকে পরিচয় হওয়ার পরে প্রথমে কথাবার্তা, প্রেম ও পরে বিয়ের প্রলোভনে শ্লীলতাহানির অভিযোগে করা মামলায় আসামির জামিন শুনানিতে এমন মন্তব্য করেছেন উচ্চ আদালত। এরপর ওই আসামির জামিন আবেদন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
পর্নোগ্রাফি আইনে দায়ের করা মামলায় এ সংক্রান্ত আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৩জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. রহুল কুদ্দুস মো. আলী রেজার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. জাকির হায়দার। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, মাগুরার এক ডিভোর্সি নারীর সঙ্গে ফেসবুকে ঢাকার রবিন আলীর পরিচয় হয়। সম্পর্কের পরে তারা একে অপরের সঙ্গে ছবি আদান-প্রদান করেন। একপর্যায়ে রবিন ব্ল্যাকমেইল করে নারীকে কুপ্রস্তাব দেন। কুপ্রস্তাব দেওয়ার কারণে ওই নারী বিক্ষুব্ধ হয়ে মামলা দায়ের করেন। আজ সেই রবিন আলীর জামিন আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন আদালত।
তিনি জানান, শুনানির সময় হাইকোর্ট সামাজিক অবক্ষয়ের কথা স্মরণ করে বেশ কিছু মন্তব্য করেছেন। উচ্চ আদালত বলেছেন, এ ধরনের পরকীয়া যারা করে, তারা অপরাধ করছেন। একটি পরকীয়া ১০টি খুনের সমান অপরাধ। হাইকোর্ট কোনোভাবেই এমন অপরাধকে প্রশ্রয় দিতে পারে না।
গত ১৫ এপ্রিল আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। তখন থেকে কারাগারে রয়েছেন তিনি। বিচারিক আদালতে জামিন না পেয়ে হাইকোর্টে জামিন চান রবিন। এর আগে, গত ৪ এপ্রিল পর্নোগ্রাফি আইনে তার বিরুদ্ধে মাগুরা সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, এক বছর আগে স্বামীর সাথে মনোমালিন্য হওয়ার কারণে বিয়েবিচ্ছেদ হয় নারী। তার দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিচ্ছেদের পর রবিনের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয় নারীর। পরিচয়ের পর থেকে রবিন বিভিন্নভাবে নারীকে প্রলোভন দিতে থাকেন এবং তাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেন।
রবিনের কথায় বিশ্বাস করে এবং তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান ওই নারী। এরপর বিভিন্ন সময় হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও কলে কথা হতো তাদের। প্রেমের সম্পর্ক হওয়া এবং বিয়ে করার প্রতিশ্রুতির জেরে নারীর পরিবারের সদস্যদের কিছু ছবি রবিনের কাছে চলে যায়। পরে নারীকে বিয়ে করার কথা বলে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঝিনাইদহ শহরের একটি রেস্টুরেন্টে দেখা করেন রবিন।
এজাহারে বলা হয়, আসামি ভুক্তভোগীর দুর্বলতা ও সরলতা কাজে লাগিয়ে ভিডিওকলে কথা বলার সময় তার অনুমতি ব্যতীত অশ্লীল ছবি-ভিডিও ধারণ করে এবং স্ক্রিনশট সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে আসামি নারীর কাছে টাকা দাবি করে এবং তার সঙ্গে বিভিন্নস্থানে শারীরিক সম্পর্ক করতে হবে বলে। ওই প্রস্তাবে রাজি না হলে আসামি রবিন আলী নারীর অশ্লিল ছবি-ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকে।