শিরোনাম
Home / চিকিৎসা / গরমে কতিপয় সতর্কতা ও হিটস্ট্রোকের চিকিৎসা নিয়ে যা জানালেন মন্ত্রী

গরমে কতিপয় সতর্কতা ও হিটস্ট্রোকের চিকিৎসা নিয়ে যা জানালেন মন্ত্রী

ঘোষণা ডেস্ক :দেশজুড়ে চলছে তাপাদাহ। ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে শিশু ও বয়স্কদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয়, গরম থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কতিপয় সতর্কতা, হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।

রোববার (২১ এপ্রিল) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান মন্ত্রী।

গরমে শিশু ও বয়স্কদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয়

মন্ত্রী বলেন, সারাদেশ তীব্র তাপদাহে প্রাণ ওষ্ঠাগত। এ গরমে শিশু ও বয়স্কদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। এ ক্ষেত্রে সামান্য কিছু সতর্কতা ও স্বাস্থ্য জটিলতা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।

১. বাচ্চা ও বয়োবৃদ্ধদের যথাসম্ভব বাসায় ঠান্ডা স্থানে রাখতে হবে। প্রয়োজন ছাড়া বাইরের তীব্র রোদে বের হওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

২. যদি একান্ত প্রয়োজনে বাইরে বের হতে হয় সে ক্ষেত্রে ছাতা, পানির বোতল, নরম সুতি কাপড়, চশমা, মাস্ক পরিধান করতে হবে। কিছুক্ষণ পর পর পানিসহ অন্যান্য তরল পান করতে হবে। খুব বেশি ঘাম হলে ডাবের পানি, পরিমাণ মতো স্যালাইন পান করা, লেবুর সরবত একটু লবণ দিয়ে ঘন ঘন খেতে হবে।

৩. ছোট বাচ্চাসহ স্কুলগামী বাচ্চাদেরও প্রচুর ঘাম হয়। এতে তাদের শরীর খেতে পানিসহ লবণ বের হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে রুমাল বা নরম সুতি কাপড় দিয়ে বারবার ঘাম মুছে দিতে হবে।

৪. একদম ছোট বাচ্চাদের বুকের দুধ বারবার খাওয়াতে হবে। প্রতিদিন নরমাল পানিতে এক থেকে দুবার গোসল করাতে হবে।

৫. বাইরে থেকে এসে সঙ্গে সঙ্গে ফ্রিজের পানি না খেয়ে কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক হলে নরমাল পানি খেতে হবে।

৬. মৌসুমি ফলমূল প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ফলের রসও উপকারি।

৭. ঘুমের সময় পর্যাপ্ত বাতাস ও ঠান্ডাস্থানের ব্যবস্থা থাকতে হবে।

৮. পথশিশু ও গ্রামের বাচ্চাদেরও প্রচুর পানি, ডাব, ফলমূলের রস পান করতে হবে। যতদ্রুত সম্ভব ছায়া কিংবা ঠান্ডা যায়গায় যেতে হবে। প্রয়োজনে টিউবওয়েল বা পুকুরে বারবার গোসল করা যেতে পারে।

৯. যেকোনো শারীরিক অসুবিধা যেমন, বমি বমি ভাব, মাথাঘোরা, প্রসাব কমে যাওয়া, মাংসপেশীতে প্রচণ্ড ব্যাথা, শরীরের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রির বেশি হলে এমনকি অজ্ঞান হলে অতিসত্ত্বর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কিংবা নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

তীব্র গরম থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কতিপয় সতর্কতা

১. পাতলা ও হালকা রঙের পোশাক পরুন।

২. বাড়ির বাইরে থাকার সময় সরাসরি রোদ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।

৩. শরীরে পানিশূন্যতা এড়াতে অতিরিক্ত পানি ও শরবত পান করুন।

৪. স্যালাইন পানিতে থাকা সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও চিনি শরীর সজীব রাখতে বিশেষভাবে কার্যকর। দীর্ঘ সময় গরমে থাকলে স্যালাইন পান করুন।

৫. গ্রীষ্মকালীন ফল দিয়ে তৈরি তাজা জুস পান করুন।

৬. মাংস এড়িয়ে বেশি করে ফল ও সবজি খান।

৭. প্রস্রাবের রঙ খেয়াল করুন। প্রস্রাবের গাঢ় রঙ পানি স্বল্পতার লক্ষণ।

৮. সব সময় ছাতা বা টুপি সঙ্গে রাখুন। ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।

৯. ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।

১০. চেষ্টা করুন যেন দিনে কম বাইরে যেতে হয়।

হিটস্ট্রোকের লক্ষণ

১. শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বেড়ে যাওয়া

২. গরমে অচেতন হয়ে যাওয়া

৩. মাথা ঘোরা

৪. তীব্র মাথা ব্যথা

৫. ঘাম কমে যাওয়া

৬. ত্বক গরম ও শুষ্ক হয়ে যাওয়া

৭. শারীরিক দুর্বলতা ও পেশিতে টান অনুভব করা

৮. বমি হওয়া

৯. হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া

১০. শ্বাস কষ্ট

১১. মানসিক বিভ্রম

১২. খিচুনি

হিটস্ট্রোকের প্রাথমিক চিকিৎসা

কারো হিটস্ট্রোক হলে বা অচেতন হয়ে গেলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এ সময়ের মধ্যে যে কাজগুলো করতে হবে তা হলো-

১. হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে নিয়ে যেতে হবে। রোগীর শরীর থেকে অপ্রয়োজনীয় কাপড় খুলে ফেলতে হবে।

২. রোগীর শরীরে বাতাস করতে হবে। কাপড় ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে গা মুছে ফেলতে হবে।

৩. শরীরের তাপমাত্রা কমাতে বগল, ঘাড়, পিঠ ও কুচকিতে আইসপ্যাক ব্যবহার করতে হবে।

Check Also

১৫ ডিসেম্বর থেকে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট পাবেন প্রবাসীরা: আইন উপদেষ্টা

ঘোষণা ডেস্ক :প্রবাসীদের পাসপোর্ট সমস্যা দ্রুত নিরসনের আভাস দিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *