
আদালত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে জানতে পেরেও কক্সবাজার পর্যটন জোনে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে স্থাপনা নির্মাণে খোদ জেলা প্রশাসন তোড়জোড় চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সৈকতের তীরে অবৈধভাবে ব্যবসার সুযোগ দেওয়া ব্যক্তিবর্গকে পরের জমিতে দোকান ঘর করে দিতে, রাতে-দিনে মাটি ফেলা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাত হতে জেলা প্রশাসন একাধিক স্কেবেটর ও মিনি ট্রাক (ডাম্পার) দিয়ে মাটি কাটা এবং সংস্কারের কাজ শুরু করেছে। মাটি এনে অনবরত ফেলা হচ্ছে বিরোধীয় জমিতে। তা তদারক করছে জেলা প্রশাসনের নিয়োগ দেওয়া বিচকর্মীরাই।
যেখানে আদালতের নির্দেশনা পালনে অন্যদের বাধ্য করার কথা প্রশাসনের সেখানে নিষেধাজ্ঞার নোটিস পেয়েই উল্টো প্রশাসনের কর্তারা আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে বলে অভিমত ভূমি মালিকের। ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমিতে প্রশাসনের এমন কর্মকাণ্ডে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার পাশাপাশি আতঙ্ক প্রকাশ করা হয়েছে।
এ নিয়ে আইন-শৃংখলা অবনতি হবার আশঙ্কা করছেন বোদ্ধামহল। মামলার বাদী হাজী জসিম উদ্দিনের অভিযোগ, আদালতের নিষেধাজ্ঞার আওয়াতাধীন কক্সবাজার শহরের পর্যটন জোনের সুগন্ধা পয়েন্টের এ জমিতে স্থাপনা নির্মাণের পরিকল্পনা করছে জেলা প্রশাসন।
অথচ গত ১৮ মার্চ বিজ্ঞ যুগ্ম প্রথম জেলা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মোছাম্মৎ রেশমা খাতুন ২৮/২০২৪ অপর মামলার আদেশে জেলা প্রশাসন গং-কে, নালিশী জমির তপশীল সংক্রান্তে (স্থিতিবস্থা) ( Status quo) নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন। পাশাপাশি ভূমির মালিকদের কোন কার্যক্রমে বাধা না দিতেও নির্দেশনা দেন বলে জানান বাদী হাজী জসিম উদ্দিন ছিদ্দিকী।
তথ্যমতে, সদর উপজেলার ঝিলংজা মৌজার আরএস ১২৪৭/৪৫ নম্বর খতিয়ানের আরএস ১৭১৭/৮৪৫০, ৮৪৬৬ দাগাদির আন্দর এক একর শূন্য ৬ শতক জমিতে এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। আর সেখানেই দোকানপাট নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
মামলায় জেলা প্রশাসক ছাড়াও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট (এডিএম) ও পর্যটনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে বিবাদী করা হয়।
হাজী জসিমের অভিযোগ আদালতের নিষেধাজ্ঞার কাগজপত্র জেলা প্রশাসনের কাছে পৌঁছানোর পর বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎ একাধিক স্কেবেটর ও মিনি ট্রাক (ডাম্পার) দিয়ে বিরোধীয় জায়গায় মাটি ভরাট এবং সমান করানোর কাজ শুরু করে জেলা প্রশাসন। যা সুস্পষ্ট আদালত অবমাননা।
যে কর্তৃপক্ষ আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করবে, তারাই যখন ভূমি দখলের উদ্যোগ নিয়েছে, এতে জমির মালিকরা আতঙ্কিত। জেলা প্রশাসনের নেক্কারজনক এমন কাজ বন্ধ না করলে তারা উচ্চ আদালতে গিয়ে এর প্রতিকার চাওয়া হবে বলে জানান তিনি।
জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, আদালত কৃর্তৃক নিষেধাজ্ঞার কাগজ এখনো পাইনি। পেলে বিস্তারিত বলতে পারব।
জেলা প্রশাসন কর্তৃক আদালতের নিষেধাজ্ঞার রিসিভ কপি প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে উল্লেখ করা হলেও কোন ধরনের কপি না পাওয়ার দাবিতে অনড় থাকেন এডিএম।
আদালতের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, আদালতের মাধ্যমে এখনো না পেলেও, ব্যক্তি মারফতে নিষেধাজ্ঞার নোটিস পেয়েছি। বিষয়টি আইনিভাবে মোকাবিলা করা হবে।