ঘোষণা ডেস্ক :সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রতিবার ঈদকে কেন্দ্র করে যানজটের কারণে যাত্রীদের প্রচুর ভোগান্তি হয়। তাই এবছর ঈদের আগে তিনদিন এবং পরে তিনদিন মোট ৬ দিন মহাসড়কে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান চলাচল বন্ধ রাখতে হবে।
বৃহস্পতিবার(২১ মার্চ) বনানী বিআরটিএর সদর কার্যালয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতর ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষ্যে সড়কপথে যাত্রীসাধারণের যাতায়াত নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে প্রস্তুতিমূলক সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানসহ আরও অনেকে। সভা সঞ্চালনা করেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী।
মন্ত্রী বলেন, ঈদে ট্রাক-ভ্যান বন্ধ থাকলেও প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য, পচনশীল দ্রব্য, গার্মেন্টস মালামাল, ওষুধ জাতীয় পণ্য, জ্বালানি, সার জাতীয় পণ্যের গাড়িগুলো এর আওতামুক্ত থাকবে। অর্থাৎ বাকি সব বন্ধ থাকলেও এগুলো শুধু চলবে।
রাজধানী ঢাকায় চলাচল করা লক্কড়-ঝক্কড় গাড়িগুলো বাংলাদেশে উন্নয়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, যখন বিদেশিরা বাংলাদেশে আসে এবং আমাদের লক্কড়-ঝক্কড় গাড়ি দেখে, তখন আমাদের খুব লজ্জা হয়। এগুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। পরিবহন মালিকদের এদিকে নজর দিতে হবে।
তিনি বলেন, পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, ঢাকার বাইরে থেকে ফিটনেসবিহীন গাড়ি ঢাকায় ঢোকে। আমি তো বলবো বাইরে থেকে সিটিতে লক্কড়-ঝক্কড় গাড়ি কম আসে। বরং সিটিতেই অনেক লক্কড়-ঝক্কড় গাড়ির কারখানা আছে।
আমি সেগুলো নিজের চোখে গিয়ে দেখেছি। ঈদের আগে সেগুলোতে রং লাগাতে দেখেছি, যে রং আবার ১০ দিনও থাকে না।
গোয়েন্দা সংস্থাকে বাড়তি ভাড়া পর্যবেক্ষণের পরামর্শ
এদিকে পবিত্র ঈদুল ফিতরে গণপরিবহনে বাড়তি ভাড়া আদায়কারীদের গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে মনিটরিংয়ের পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।
সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, কোনো ঈদেই মালিকপক্ষ যাত্রীদের থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় করে না। একটি চক্র প্রতি ঈদে বাড়তি ভাড়া আদায়ের কাজটি করে।
তিনি বলেন, ঈদে মালিকদের থেকে অতিরিক্ত কোনো ভাড়া নেয়া হয় না। তারপরও প্রতিবার অতিরিক্ত ভাড়ার অভিযোগ আসে। আমাদের আসলে এতো পরিমাণ গাড়ি… যার কারণে সবগুলোকে একসঙ্গে দেখা সম্ভব হয় না। প্রতিবার কিছু অসাধু মানুষ আগেই বেশি করে টিকিট কেটে রেখে দেয়, এরপর ঈদের আগে বেশি দামে বিক্রি করে। এ বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থাকে কাজে লাগালে প্রতিকার পাওয়া যাবে।
মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, এবার অন্যান্য সময়ের তুলনায় রাস্তাঘাট অনেক ভালো হয়েছে। দুই লেনের রাস্তাগুলো এখন চার লেন হচ্ছে। এগুলোতে ব্যবস্থা নিলে আসা করি এই ঈদে যানবাহন চলাচলে সমস্যা হবে না। গতবার ট্রাফিক পুলিশ ড্রোন দিয়ে রাস্তার সার্বিক অবস্থা দেখার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল, যে কারণে ক্যামেরায় দেখে সঙ্গে সঙ্গে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পেরেছি। এবারও যদি এ রকমটা হয়, তাহলে অনেকটাই সুবিধা হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা দেখি প্রতিবারই রাস্তার পাশে হাটবাজার থাকার কারণে যানবাহন চলাচল করতে সমস্যা হয়। এগুলো বন্ধ করার অনুরোধ, অন্যথায় অন্তত মূল সড়ক থেকে হাটবাজার যেন অন্তত দূরে হয়। তাহলে এবার ঈদে অন্যান্যবারের মতো ভোগান্তি পোহাতে হবে না।
ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি বলেন, প্রতি ঈদেই রাজধানীতে বাড়তি গাড়ি চলে আসে, যেগুলোর কোনো ফিটনেস থাকে না। এগুলোর কারণেই দুর্ঘটনা বেশি ঘটে। এবার ঈদে যেন এগুলো চলতে না পারে। দুর্ঘটনার আরেকটি কারণ হলো মহাসড়কগুলোতে মানুষ অনেক স্পিডে গাড়ি চালায়, সেই সড়কে নসিমন-করিমন চলাচলের কারণে দুর্ঘটনা দেখা যায়। আগামীতে সমস্যা থাকবে না।