শিরোনাম
Home / অপরাধ / চট্টগ্রামের চান্দগাঁওয়ে যুবককে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

চট্টগ্রামের চান্দগাঁওয়ে যুবককে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

সিএমপির চান্দগাঁওয়ে এক যুবককে আটক করে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর গুরুতর অভিযোগ উঠেছে চান্দগাঁও থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার ৩০/১১/২০২৩ ইং তারিখ সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টার সময় পাঁচলাইশ থানাধীন খতিবেরহাট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করলেও মামলার এজাহারে

বলা হয় রাত ১১.০৫ টার সময় এবং গ্রেফতারের স্থান দেখানো হয় পূর্ব ফরিদের পাড়া সামাজিক কবরস্থানের পাশ থেকে।

মামলাসূত্রে জানা যায়, মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে মো: ইসমাইল হোসেন পশ্চিম ফরিদের পাড়াস্থ ঝর্ণা কলোনীতে বসবাস করেন। ঘটনার সময় এসআই লুৎফর রহমান সোহেল রানা দায়িত্বরত অবস্থায় পূর্ব ফরিদের পাড়া সামাজিক কবরস্থানের পাশে চান্দগাঁও আবাসিকের প্রবেশমুখের কালভার্টের উপর কতিপয় সন্ত্রাসী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে গোপনসূত্রে এমন সংবাদ পেয়ে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে অবহিত করে ঘটনাস্থলে টিম নিয়ে উপস্থিত হলে পালানোর সময় সঙ্গীয় টিম এবং সোর্সের সহায়তায় টেম্পু চালক মো: ইসমাইল হোসেন প্রকাশ টেম্পুকে
২টি কার্তুজ ও দেশীয় তৈরি এলজিসহ গ্রেফতার করা হয়।

অনুসন্ধান ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়লে ইসমাইলের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা হয়। দীর্ঘদিন জেলে থাকার পর অপরাধবোধ থেকে ইসমাইল নিজেকে পরিবর্তন করার অঙ্গীকার করে একজন ভালো মানুষ হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যায় এবং নিয়মিত নামাজ আদায়ে মনোনিবেশ করে। সমস্ত অপরাধ মূলক কার্যক্রম বাদ দিয়ে লোকজনের সাথে ভালো আচার-আচরণ করতে থাকে। ঘটনার দিন মাগরিবের নামাজ আদায়ের পর খতিবহাট মোড়ে ফরিদের পাড়া রোডের মুখে মহিউদ্দীনের কুলিং কর্ণারে বসে চা খাওয়ার সময় হঠাৎ ৪-৫ জন লোক এসে ইসমাইলকে তুলে নিয়ে যায়। আশপাশের লোকজন তাকে কেন নিয়ে যাচ্ছে জানতে চাইলেও তারা কোন উত্তর দেয়নি। রাতে তার পরিবারের লোকজন জানতে পারে তাকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। পুলিশ হেফাজতে মারধরের কারণে অসুস্থ হওয়ায় তাকে চিকিৎসার জন্য মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়।

এলাকার মো: সিরাজুল ইসলাম বলেন, ইসমাইল একসময় খারাপ থাকলেও এখন ভালো হয়ে গেছে। তার আচার-আচরণ ও চলাফেরায় খারাপ কিছু দেখা যায় না।

এলাকাবাসী মো: মফিজুর রহমান বলেন, মাগরিবের নামাজের পর ইসমাইল চা দোকানে বসে ছিলো। হঠাৎ করে কতগুলো লোক এসে তাকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। এসময় আমরা তার হাতে বন্দুক কিংবা অন্য কোন অস্ত্র দেখিনি। পরদিন জানতে পারলাম তাকে অস্ত্র দিয়ে গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ।

এলাকাবাসী সাইফুল ইসলাম বলেন, ইসমাইল খতিব হাট মোড়ের কুলিং কর্ণারে বসে ছিলো। সিভিল টিম এসে ধরধর বলে তাকে ধরে অনেক মারধর করে থানায় নিয়ে অস্ত্র দিয়ে চালান করে দেয়।

দোকানদার মহিউদ্দিন বলেন, ইসমাইল মাগরিবের নামাজ পড়ে আমার দোকানে এসে চা- নাস্তা খেতে বসছিলো। তখন তাকে সাদা পোশাকে কয়েকজন লোক তাকে তুলে নিয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী আলমগীর বলেন, একজন অপরাধী যতোই অপরাধ করুক না কেন তাকে ভালো হওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত। ইসমাইল আগে অপরাধ করছে বলে তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর কোন মানে হয় না।

স্ত্রী শেলী আক্তার বলেন, আমার স্বামী ৫ ওয়াক্ত নামাজ দোয়া পড়তেন। সকল অপরাধ থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু তাকে অস্ত্র দিয়ে নতুন মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হলো, এখন আমরা ১বেলা খেয়ে আরেক বেলা না খেয়ে দিন কাটাচ্ছি। এই মিথ্যা মামলা থেকে আমার স্বামীর মুক্তি দাবী করছি।

ইসমাইলের মা মাহফুজা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে ভালো হতে দিচ্ছে না পুলিশ। আমার ছেলের বিরুদ্ধে অনেক মামলা রয়েছে, সে এখন ভালো হয়ে সুন্দরভাবে বাঁচতে চেয়েছিলো। কিন্তু পুলিশ আমার ছেলের শত্রুর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। আমি ন্যায় বিচার চাই, যারা আমার ছেলেকে ফাঁসিয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।

এই ব্যাপারে জানতে চাইলে চান্দগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ জাহিদুল কবির বলেন, অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর কোন সুযোগ নেই। মামলায় যেই ঘটনাস্থল থেকে যে সময় অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়েছে মর্মে উল্লখ করা হয় সেটাই প্রকৃত সত্য। ইসমাইল একজন সন্ত্রাসী, তার বিরুদ্ধে অন্তত দেড় ডজন মামলা রয়েছে। তার পরিবারের সদস্যরা পুলিশের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিমূলক গুজব ছড়িয়ে ফায়দা লুটার চেষ্টা করছে।

Check Also

সিডিএর নতুন চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম

নিজস্ব প্রতিবেদক :চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান হিসেবে আগামী ৩ বছরের জন্য নিয়োগ পেয়েছেন প্রকৌশলী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *