শিরোনাম
Home / অপরাধ / পিতার হত্যা মামলার ১৬ আসামিকেই ৭ দিনের মধ্যে জামিন দেয়ায় বিচারকে জুতা নিক্ষেপ

পিতার হত্যা মামলার ১৬ আসামিকেই ৭ দিনের মধ্যে জামিন দেয়ায় বিচারকে জুতা নিক্ষেপ

ঘোষণা ডেস্ক : পঞ্চগড়ের সদর উপজেলায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে হত্যাকান্ডের ঘটনায় এক হত্যা মামলায় ১৬ জন আসামিকে অর্ন্তবর্তীকালীন জামিন দেয়ার ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়ে পঞ্চগড় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক অলরাম কার্জিকে লক্ষ্য করে জুতা নিক্ষেপ করেছেন মামলার বাদী মিনারা আক্তার। সোমবার (১১ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় পঞ্চগড় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটির শুনানির শেষ পর্যায়ে এঘটনাটি ঘটে। পরে মামলার বাদী মনিারা আক্তারকে আটক করে কোর্ট পুলিশ। এ ঘটনায় আইনী প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে।

এর আগে সোমবার সকালে মামলাটির ১৯ জন আসামীর মধ্যে ১-৩ নম্বর আসামী অনুপস্থিত ছিলেন এবং ৪ থেকে ১৯ নম্বর আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। পরে আদালত তাদের আগামী ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত অর্ন্তবর্তীকালীন জামিন প্রদান করেন।

আদালত ও মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, গত ৫ ডিসেম্বর সদর উপজেলার সাতমেড়া ইউনিয়নের সাহেবীজোত ডাঙ্গাপাড়া এলাকায় জমি নিয়ে বিরোধের সময় মারামারিতে ছোট ভাই আব্দুল মমিনের কিলঘুষিতে বড়ভাই ইয়াকুব আলীর মৃত্যু হয়। পরে এ ঘটনায় নিহতের ছোট মেয়ে মিনারা আক্তার ৫ ডিসেম্বর রাতে পঞ্চগড় সদর থানায় বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

নিহতের বড় ছেলের স্ত্রী রওশনা আক্তার লিলি সহ বাদী পক্ষের স্বজনরা বলেন, এমন একটি হত্যা মামলার আসামীদের কিভাবে কোন আইনে জামিন দেয়া হয়। আমরা এই ঘটনার ন্যায় বিচার চাই। এখানে টাকা বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। আমাদের মামলার বাদীকে পুলিশ আটক করে রেখেছে। তাকে ছেড়ে না দেয়া পর্যন্ত আমরা আদালত থেকে যাব না।

জেলা জজ আদালতের আইনজীবী আবু মো ইউনুস আলী লেলিন বলেন, বাদীর নিম্ন আদালতের রায় যদি আমাদের পছন্দ না হয় তাহলে উচ্চ আদালতের যাওয়া সুযোগ আছে। কিন্তু বাদী আজকে বিচারক অলরাম কার্জিকে লক্ষ্য করে জুতা ছুড়ে মেরেছে। জুতাটি বিচারকের সামনে থাকা গ্লাসে লেগে নিচে পড়ে যায়। এটা কোনভাবেই কাম্য নয়। এরপর যে আইনজীবী বা অন্য কাউকে মারা হবে না, তা মনে করা যাবে না। জামিনের ঘটনাটি আদালতের এখতিয়ারের মধ্যে আছে। বাদীর উচ্চ আদালতের যাওয়া সুযোগ আছে।

বাদী পক্ষের আইনজীবী হাবিবুল ইসলাম হাবিব বলেন, কয়েক দিন আগে বাদীর বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। আজকে তাদের বাড়িতে কুলখানি হচ্ছে। এ অবস্থায় একটি হত্যা মামলায় সব আসামির জামিন দেওয়া কোন ভাবে কাম্য নয়। বিচারকের এমন আদেশে আমরা তাৎক্ষণিক আদালত ত্যাগ করে চলে আসি। এই বিচারক এর আগেও ছোট ঘটনায় কাউকে জামিন দিতেন না। এখন আবার বড় ঘটনায় আসামীদের জামিন দিয়েছেন। আজকে আদালত আমাদের কাছে নিহতের সুরতহালের  প্রতিবেদন এবং মামলার ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন চাচ্ছিলেন। এখনি আমরা এসব কোথায় পাব।

আসামি পক্ষের আইনজীবী রাকিবুত তারেক বলেন, আসামিদের ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত অন্তবর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন আদালত। মামলার ১ থেকে ৩ নম্বর আসামি আত্মসমর্পন করেননি। যারা আত্মসমর্পণ করেছেন তাদের অধিকাংশই নারী ছিলেন। এছাড়া আসামিদের বক্তব্য ছিল, ওই ব্যক্তি হার্ট এ্যাটাকে মারা গেছেন। মামলার জব্দ তালিকা এবং সুরতহাল রিপোর্টের নথিতে এই তথ্য নেই। তাই সার্বিক বিবেচনা করে এই জামিন দেয়া হয়েছে।

পঞ্চগড় আদালত পুলিশের পরিদর্শক জামাল হোসেন জুতা নিক্ষেপের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আদালতে বিচারক ও আইনজীবিদের বৈঠক চলছে। পরে সে সিদ্ধান্ত আসবে ওই অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিব।

Check Also

৪৯৩ উপজেলা চেয়ারম্যান, ৩২৩ পৌরসভা মেয়র এবং ৬০ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে অপসারণ

ঘোষণা ডেস্ক :আওয়ামী সরকারের আমলে নির্বাচিত ৪৯৩ উপজেলা চেয়ারম্যান, ৩২৩ পৌরসভার মেয়র ও ৬০ জেলা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *