
ঘোষণা ডেস্ক : ফেসবুকে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে অনলাইনে ব্যাংক ঋণ দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে সাবেক এক যুগ্ম সচিবের ছেলেসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগ। তবে যুগ্ম সচিবের স্ত্রী ও তার ছেলের বউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
তারা হলেন, মো. সৈয়দ আরিফ হাসান রনি, মো. সুমন ইসলাম হৃদয়, রাসেল আহমেদ, হাবিব ও খন্দকার মো. ফারুক।
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের লোনের নকল অনুমোদনপত্র, নকল সিল ৭টি, ঋণের নকল চুক্তিপত্র, অফিস রেজিস্ট্রার, বিভিন্ন ব্যাংকের নকল ঋণ আবেদনপত্র এবং গ্রাহককে প্রদানকৃত নকল মানি রিসিট জব্দ করা হয়। রাজধানীর মতিঝিল ও বনশ্রী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।
ডিবি বলছে, বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার নামে মানুষের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করে আসছিলেন যুগ্ম সচিবের ছেলে আরিফ হাসান রনি ও তার সহযোগীরা।
সংবাদ মাধ্যমে এসব তথ্য জানান ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) সাইফুল রহমান আজাদ।
তিনি বলেন, ইলমান খান নামে এক ব্যক্তি ফেসবুকে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ সংক্রান্ত তথ্য দেখে গ্রেফতার আরিফের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এক পর্যায়ে আরিফ শিল্প ঋণ, এসএমই, পার্সোনাল লোন ও হোম লোনসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ প্রক্রিয়া করার কথা ইলমানকে জানায়। ভুক্তভোগী আরিফের কথা বিশ্বাস করে দুটি লোনের জন্য আরিফের সঙ্গে লিখিত চুক্তি করে এবং অফিস খরচ, ঋণের প্রাক অনুমোদন অডিট বাবদ বিভিন্ন সময়ে ২১ লাখ ৫ হাজার টাকা প্রদান করেন।
পরবর্তীতে ভুক্তভোগী ইলমান বুঝতে পারেন তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। ইলমান পাওনা টাকা ফেরত চাইলে অভিযুক্তরা টাকা না দিয়ে হুমকি দেয়। এ ঘটনায় ইলমান গত ২০ অক্টোবর মতিঝিল থানায় মামলা করেন।
এডিসি সাইফুল রহমান বলেন, মামলাটি ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগে হস্তান্তর হলে ইনভেস্টিগেশন টিম তদন্ত শুরু করে। গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করে মতিঝিল ও বনশ্রী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। ব্যাংক ঋণ ছাড়াও ট্রেড লাইসেন্স, কোম্পানি নিবন্ধনসহ বিভিন্ন কাজ করিয়ে দেওয়ার কথা বলে মানুষের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করতো চক্রটি।
গ্রেফতার আরিফ হাসান রনির এই প্রতারণার কাজে তার মা সেলিনা চৌধুরী এবং স্ত্রী আফরোজা আক্তার বেবি সহযোগিতা করতেন। এছাড়া মোজাম্মেল নামের এক ব্যক্তি এই চক্রের সঙ্গে জড়িত। আরিফ ৪টি ভুয়া প্রতিষ্ঠান খুলে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করতো বলেও জানিয়েছেন ডিবির এই কর্মকর্তা।