নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার সদর সাব-রেজিস্ট্রার পারভিন আক্তারকে সরকারি রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। গত মঙ্গলবার(১৭ অক্টোবর) সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করতে গেলে বিচারক এ কিউ এম নাসির উদ্দিন তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানা যায়।
দুদকের আইনজীবী লুৎফুর কিবরিয়া শামীম বিষয়টি নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘২০২০ সালে সিলেট সদর সাব-রেজিস্ট্রার এলাকাধীন একটি কম্পানির নামে থাকা ১৫ একর জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে ব্যক্তি মালিকানা ও টিলা শ্রেণি দেখিয়ে ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে সাব-রেজিস্ট্রার পারভিন আক্তার ১২টি দলিল রেজিস্ট্রেশন করেন।
তাতে সরকার ১ কোটি ২৬ লাখ ৩৯ হাজার ২২৯ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়। এ নিয়ে কোম্পানির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী বাদী হয়ে ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি দলিলদাতা ও সাব-রেজিস্ট্রার পারভিন আক্তারসহ ২২ জনকে আসামি করে সিলেট মহানগর বিশেষ জজ আদালতে মামলা করেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘আদালত দুর্নীতি দমন কমিশনকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। ওই মামলায় সাব-রেজিস্ট্রার পারভীন আক্তার আত্মসমর্পণ করতে যান মঙ্গলবার।
শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে ওই কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।’
জানা যায়, ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলের পূর্বে সাব- রেজিস্ট্রার পারভিন আক্তার ওই বছরে ১৮ জুন চট্টগ্রামের হাটহাজারী সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে যোগদান করেন। আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে গত ১৫ অক্টোবর অফিস শেষে পারভিন হাটহাজারী থেকে একদিনের ছুটি নিয়ে সিলেট যান। পরদিন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে সিলেট আদালতে আত্মসমর্পণ না করে নিয়মিত সাব-রেজিস্ট্রার পদে অফিস করছিলেন পারভিন আক্তার। তিনি হাটহাজারীতে অফিস করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন কয়েকজন দলিল লেখক। সাব-রেজিস্ট্রার পারভিন গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানতে পেরে বিস্ময় প্রকাশ করে তারা বলেন, দুদকের মামলা কিংবা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার বিষয়টি জানা ছিল না।
হাটহাজারী সদর সাব-রেজিস্ট্রার দপ্তরের সাথে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করে জানায়, সাব-রেজিস্ট্রার পারভিন আক্তার যোগদানের পর থেকে এই অফিসের সহকারীসহ সিন্ডিকেট করে নানা অনিয়ম করে আসছেন। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ ভূমি মালিকেরা।