নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, ‘এই সরকারের বিরুদ্ধে আজকে মানুষ জেগে ওঠেছে। সারাদেশের মানুষ হারানো গণতন্ত্র ফিরে পেতে চায়। নিজের ভোট নিজে দিতে চায়। দেশের মানুষ আন্দোলনমুখী। আন্দোলন ছাড়া সফলতা অর্জন করা যায় না। একদফার আন্দোলনের জোয়ারে সরকার পালাবে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে শেখ হাসিনার সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। এছাড়া কোনো বিকল্প নেই।’
শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রামের কাজীর দেউরী নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে নুর আহম্মেদ সড়কে বিএনপির ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির র্যালি-পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
মানুষ বিএনপির কাছে অ্যাকশন দেখতে চায়’ উল্লেখ করে আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘মানুষ এখন বক্তৃতা শুনতে চায় না। মানুষ অ্যাকশন চায়। সেই অ্যাকশন জাতীয়তাবাদী দলের নেতৃত্বের কাছে চায়। আজকে মানুষ চায়- আমার ভোট আমি দেবো, আমার ইচ্ছায় যাকে খুশি তাকে দেবো। এখানে অমুককে দেব, তমুককে দেব বলে কোনো কথা নেই।’
জিয়াউর রহমান দেশের অর্থনৈতিক পরিবর্তনে নিষ্ঠা দেখিয়েছেন উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আজ এই সভা থেকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে যে আমরা লড়াই করব। লড়াই করে বিএনপিকে আবার ক্ষমতায় আনব। আমাদের খতিয়ে দেখা উচিত জিয়াউর রহমানের সাথে মানুষের সম্পর্ক কী রকম ছিল। তিনি একজন মেজর ছিলেন। মেজর জিয়া দেশের রাজনীতি ও অর্থনীতির পরিবর্তনে যে নিষ্ঠা দেখিয়েছেন যে কারণে দেশের মানুষ আকাঙ্ক্ষায়িত হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান জাতীয়তাবাদকে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলেন।’
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা: শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম সাইফুল আলমের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রমবিষয়ক সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন ও মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর।
এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা এম এ আজিজ, মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার, সৈয়দ আজম উদ্দীন, এস কে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, শফিকুর রহমান স্বপন, কাজী বেলাল উদ্দিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, মো: শাহ আলম, ইসকান্দর মির্জা, আবদুল মান্নান, এরশাদ উল্লাহ, জয়নাল আবেদীন জিয়া, হারুন জামান, মো: আলী, মাহবুব আলম, অ্যাড. মুফিজুল হক ভূঁইয়া, নিয়াজ মো: খান, অধ্যাপক নুরুল আলম রাজু, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল প্রমুখ।
সভাপতির বক্তৃতায় ডা: শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরকে চাঙ্গা করে অর্থনৈতিক যোগান দিয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমান সরকার শহীদ জিয়ার সে অগ্রগতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ দেশে বিভেদের রাজনীতি শুরু করেছে। আওয়ামী লীগের নেতারা বিষোদগার করে চলেছেন জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের বিরুদ্ধে। তারা শহীদ জিয়ার একাত্তর সালের মুক্তিযুদ্ধের ভূমিকা নিয়েও হাস্যকর বক্তব্য দিচ্ছেন। এই কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যগুলো থেকে প্রমাণিত হয় যে, এরা কতটা প্রতিহিংসাপরায়ণ।’
তিনি আরো বলেন, ‘কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে শহীদ জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি যেদিন শাহাদতবরণ করেন সেদিন এদেশের লাখ লাখ মানুষ তার জন্য কেঁদেছিল। মানিক মিয়া এভিনিউতে লাখ লাখ মানুষের তার জানাজায় অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে তিনি যে কত জনপ্রিয় নেতা ছিলেন সেটা প্রমাণিত হয়েছে।’
আব্দুল্লাহ আল নোমানের নেতৃত্বে বিএনপির বর্ণাঢ্য র্যালিটি কাজীর দেউরি নুর আহমেদ সড়ক থেকে শুরু হয়ে লাভ লেন, জুবলি রোড হয়ে তিন পুলের মাথায় গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।