ঘোষণা ডেস্ক : নানা আলোচনা- সমালোচনা ও বিতর্কের পর অবশেষে বদলী করা হলো পাঁচলাইশ থানার ওসি নাজিম উদ্দীন মজুমদারকে। একইসাথে বদলী হয়েছেন খুলশী থানার ওসি সন্তোষ কুমার চাকমা।
পাঁচলাইশের ওসি নাজিম উদ্দিন মজুমদারকে নগর পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) বদলি করা হয়েছে। খুলশী থানার ওসি সন্তোষ কুমার চাকমাকে পাঠানো হয়েছে পাঁচলাইশে।
খুলশীতে ওসি করে পাঠানো হয়েছে কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রুবেল হাওলাদারকে।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) স্পীনা রানী প্রামাণিক বলেন, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় রোববার (২০ আগষ্ট) বদলির এই আদেশ দিয়েছেন।
দুই থানার ওসির পাশাপাশি আরো ৩ পরিদর্শকও বদলি হয়েছেন। এসবি’র পরিদর্শক এআই এম তৌহিদুল করিমকে চকবাজার থানার পরিদর্শক (তদন্ত), একই দপ্তরের রফিক উল্লাহকে প্রসিকিউশন শাখায়, প্রসিকিউশন শাখার পরিদর্শক মোহাম্মদ আতিকুর রহমানকে গোয়েন্দা শাখার উত্তর বিভাগে বদলি করা হয়েছে।
সিএমপি গোয়েন্দা বিভাগে কর্মরত থাকাকালীন সন্তোষ চাকমা সদরঘাট থানার একটি ডাকাতি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এ ডাকাতির সঙ্গে জঙ্গি সম্পৃক্ততার বিষয়টি তুলে আনেন। বিভিন্ন জঙ্গি আস্তানায় অভিযান ও বোমা নিস্ক্রিয়করণে তার ভূমিকা আলোচিত ছিল।
পরবর্তীকালে পিবিআই’তে পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত অবস্থায় সন্তোষ কর্ণফুলী থানায় ডাকাতি ও গণধর্ষণ, ছাত্রলীগ নেতা সুদীপ্ত বিশ্বাস হত্যা মামলার তদন্ত করে লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুমকে গ্রেপ্তার ও তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছিলেন। সর্বশেষ বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যা মামলাটি পিবিআইতে স্থানান্তরের পর এ মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন সন্তোষ চাকমা। তখনই গ্রেপ্তার হন বাবুল। তদন্ত চলাকালীন পিবিআই থেকে বদলি হয়ে পুনরায় সিএমপি’তে ফেরেন সন্তোষ।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরীর হামজারবাগে বাড়ি দখল ও চাঁদা দাবির অভিযোগে পাঁচলাইশ থানার বিতর্কিত ওসি নাজিম উদ্দীন ও এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন শামীমা ওয়াহেদ নামে এক নারী। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অলিউল্লাহর আদালতে এই মামলা দায়ের করা হয়। আদালত মামলাটিকে ক্রিমিনাল মামলা হিসেবে আমলে নিয়ে চট্টগ্রাম পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআইকে) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে চট্টগ্রামে কিডনি ডায়ালাইসিসের খরচ বাড়ানোর প্রতিবাদ করায় মো. মুনতাকিম প্রকাশ মোস্তাকিম নামের এক যুবককে পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে পাঁচলাইশ থানার ওসি এবং এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে গত ২২ ফেব্রুয়ারি মামলা করা হয়। ওই সময় মেডিকেল পরীক্ষা ও গণমাধ্যমে মুনতাকিমের যেসব ছবি প্রকাশ হয়, সেখানে মোস্তাকিমের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন দেখা গিয়েছিল।
এরপর আদালতের আদেশ অনুযায়ী মোস্তাকিমের পক্ষে চট্টগ্রাম সিআইডির পুলিশ সুপার মো. শাহনেওয়াজ খালেদ গত ২২ ফেব্রুয়ারি পাঁচলাইশ থানার ওসি নাজিম উদ্দিন ও এসআই আব্দুল আজিজের বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত করেন। কিন্তু মামলা হওয়ার আগের দিন হঠাৎ ছুটিতে চলে যান অভিযুক্ত ওসি নাজিম এবং এসআই। অথচ ফৌজদারি মামলা হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ।
পরে সিআইডি মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে জানায়, মুনতাকিমকে পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের কিছুই পাওয়া যায়নি এবং মামলায় যেসব তথ্য দেওয়া হয়েছে সেগুলোরও সত্যতা পাওয়া যায়নি।
অথচ আইন অনুযায়ী চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের আগে বাদীকেও কিছু জানানো হয়নি।