
নিজস্ব প্রতিবেদক : নগরের পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাজিম উদ্দিন মজুমদার, উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জাকিরসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে ৫০ লাখ টাকার চাঁদা দাবি, মিথ্যা মামলায় জড়ানো ও বাড়ি থেকে উচ্ছেদের চেষ্টার অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অলি উল্লাহর আদালতে শামীমা ওয়াহেদ নামে এক নারী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় আহমেদ ফয়সাল চৌধুরী নামে এক ব্যক্তিসহ অজ্ঞাত আরো ৫/৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন বাদীর আইনজীবী ব্যারিস্টার আফরোজা আক্তার।
তিনি বলেন, দেওয়ানি আদালতের আদেশের তোয়াক্কা না করে থানায় নিয়ে গিয়ে মিথ্যা মামলার হুমকিসহ থানার প্রশ্রয়ে ভবনে অবৈধ অনুপ্রবেশ করে শ্বাসরোধ চেষ্টা, জমি দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগে পাঁচলাইশ থানার ওসি, এসআইসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করা হয়। আদালত মামলার বাদী শামীমা ওয়াহেদের জবানবন্দি গ্রহণ করে। মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রোকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়,অভিযুক্ত ফয়সাল আহমেদ চৌধুরী তার মৃত স্বামীর প্রথম স্ত্রীর সন্তান।
নগরের পাঁচলাইশ এলাকায় বাদীর মা রিজিয়া বেগমের নামে কেনা বাড়িতে তারা থাকেন। নগরের পাঁচলাইশ থানার জাংগাল পাড়ায় ১৯৯৬ সাল থেকে রিজিয়া ম্যানশনের একটি ফ্লাটে বসবাস করছেন শামিমা ওয়াহেদ। ২০১২ সালে স্বামী ওয়াহেদ আজগর চৌধুরী মৃত্যুর পরে আহমেদ ফয়সাল চৌধুরী শামিমা ওয়াহেদ ও তার দুই নাবালক সন্তানদের বিভিন্ন মিথ্যা মামলা ও সামাজিকভাবে হয়রানি করে। গত ২৭ জুলাই থানায় নিয়ে গিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে ভবন ছাড়ার হুমকি দেন ওসি নাজিম উদ্দিন মজুমদার। এ সময় শামিমা ওসিকে রিজিয়া ভবনটি নিয়ে দেওয়ানি আদালতের নিষেধাজ্ঞার আদেশ বারবার দেখালেও তা তোয়াক্কা করেনি। গত ১২ আগস্ট ওসির নির্দেশে আহমেদ ফয়সাল চৌধুরী ও এসআই জাকিরসহ ৫-৬ জন সন্ত্রাসী নিয়ে ওই ভবনে অনুপ্রবেশ করেন। এ সময় শামিমার ভাই সাজ্জাদুল ইসলামকে গলা চেপে শ্বাসরোধের চেষ্টা করলে ভাইকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে এসআই জাকির অস্ত্র ঠেকিয়ে শামিমাকে হত্যার ভয় দেখিয়ে আটক রাখে। এরপর প্রাণভিক্ষা চাইলে ওসির নির্দেশে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন তারা। ১৫ দিনের মধ্যে চাঁদা না দিলে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো এবং হত্যা করার হুমকিও দেন তারা। গত ১৬ আগস্ট ভবনে ঢুকে আবারো সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে তাদের বের করে দেওয়ার চেষ্টা চালানো হয়। ওইদিন বিকেল ৫ টার দিকে বিদেশী কুকুর নিয়ে অবস্থান করে ভবনের বাসিন্দাদের ভয় দেখান তারা। এতেও পুলিশ নীরব দর্শকরের ভূমিকা পালন করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন মজুমদারের মুঠোফোনে কল করা হলে ফোন ধরেন পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, ওসি সাহেব ছুটিতে আছেন।
পরে পাঁচলাইশ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাকির হোসেন মামলার সব ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, জায়গা জমি নিয়ে তাদের পারিবারিক বিরোধ। এখানে পুলিশের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। থানায় একটি জিডি করেন ফয়সাল। এটির তদন্ত করে পুলিশ।