শিরোনাম
Home / আদালত / চট্টগ্রামে আইনজীবীকে হত্যা: স্ত্রীসহ ২ জনের ফাঁসি, ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

চট্টগ্রামে আইনজীবীকে হত্যা: স্ত্রীসহ ২ জনের ফাঁসি, ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

 নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রামে ওমর ফারুক বাপ্পী নামের এক আইনজীবীকে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, বাপ্পীর স্ত্রী রাশেদা বেগম (৩৩) ও হুমায়ুন রশিদ (৩৪)। রায়ে তাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দণ্ড কার্যকরের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (২৬ জুলাই) সকালে চট্টগ্রাম তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জসিম উদ্দিন এ রায় দেন।

রায়ে মামলার অন্য ৩ আসামি আল আমিন (৩৪), আকবর হোসেন ওরফে রুবেল ওরফে সাদ্দাম (২৯) এবং মো. পারভেজ ওরফে আলীকে (২৯) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো দুই মাস বিনাশ্রম করাদণ্ড দেওয়া হয়। রায়ে জাকির হোসেন ওরফে মোল্লা জাকির (৩৫) নামের এক আসামিকে বেকসুর খালাস দেন আদালত। নিহত বাপ্পী পার্বত্য জেলা বান্দরবানের আলীকদম থানাধীন চৌমুহনী এলাকার আলী আহমেদের ছেলে।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট আবদুর রশীদ বলেন, আইনজীবী ওমর ফারুক বাপ্পী হত্যা মামলায় তৃতীয় মহানগর দায়রা জজ আদালত দুই আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড, ৩ জনকে যাবজ্জীবন এবং একজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হুমায়ুন রশিদ, যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত পারভেজ এবং খালাস পাওয়া জাকির হোসেন আদালতে হাজির ছিলেন।

রায় ঘোষণার পর আদালতে হাজির থাকা দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে সাজা পরোয়ানামূলে কারাগারে পাঠানো হয়। দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক অন্য ৩ আসামির বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেন আদালত। মামলার শুরু থেকেই ওই ৩ আসামি পলাতক।

মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর নগরীর চকবাজার থানাধীন কে বি আমান আলী রোডের একটি ভবনের নিচ তলার বাসা থেকে বাপ্পীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় মরদেহের হাত-পা ও মুখ টেপ দিয়ে মোড়ানো ছিলো। পাশাপাশি স্পর্শকাতর অঙ্গ কাটা অবস্থায় পাওয়া যায়। এ ঘটনায় বাপ্পীর বাবা আলী আহমেদ বাদী হয়ে ওইদিনই চকবাজার থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ওমর ফারুক বাপ্পী ২০১৩ সালে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার আগ পর্যন্ত পরিবারের লোকজন জানতেন বাপ্পী অবিবাহিত।

মামলার দুদিন পর ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থান থেকে রাশেদা বেগমসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

মামলার তদন্তে উঠে আসে, দেলোয়ার নামে এক ইয়াবা পাচারকারীর স্ত্রী ছিলেন গ্রেফতার রাশেদা বেগম। স্বামীর মামলার সূত্র ধরে আইনজীবী বাপ্পীর সঙ্গে পরিচয়। এরপর তাদের মধ্যে ঘনিষ্টতা তৈরি হয়। একপর্যায়ে তারা গোপনে বিয়ে করেন। মূলত কাবিনের টাকা নিয়ে জটিলতার কারণে রাশেদা বেগমই বন্ধু হুমায়ুনের মাধ্যমে ভাড়া করা যুবকদের দিয়ে বাপ্পীকে হত্যা করেন।

এ হত্যা মামলায় ২০১৮ সালে ৫ এপ্রিল ছয় আসামির বিরুদ্ধে আদালতকে অভিযোগপত্র দেয় পিবিআই। ২০২০ সালে ১৫ অক্টোবর মামলায় অভিযোগ গঠন করেন আদালত। মামলার বিচারকাজ চলাকালীন অভিযোগপত্রভুক্ত ৩২ সাক্ষীর মধ্যে আদালত ২৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।

Check Also

চট্টগ্রামে ইয়াবা বেচা-কেনায় কারারক্ষী!

ঘোষণা ডেস্ক :চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানা এলাকা থেকে ইয়াবাসহ মো. শাহাব উদ্দিন (২৮) ও তার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *