নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির পদযাত্রা শেষে চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. মহিউদ্দিন বাচ্চুর প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা, প্রচারণার গাড়ি ও যানবাহন ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।
হামলা-ভাংচুরের পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভের পাশাপাশি নগরীর নুর আহমদ সড়কে বিএনপির দলীয় কার্যালয় ভাংচুর করে।
বুধবার (১৯ জুলাই) বিকেলে নগরীর খুলশী থানার লালখান বাজারে জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদের মূল গেটের বিপরীতে প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলার এ ঘটনা ঘটে। এরপর সন্ধ্যা ৬টার দিকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নগরীর নুর আহমদ সড়কে নাসিমন ভবনে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর চালিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে পদযাত্রা শেষে লালখান বাজার নির্বাচনী কার্যালয়ের সামনে দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা হেঁটে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ নির্বাচনী কার্যালয়কে লক্ষ্য করে তারা ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। কয়েকজন ভেতরে গিয়ে প্রচারণার কয়েকটি ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে ও চেয়ারসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এছাড়া কার্যালয়ের সামনে রাখা নির্বাচনী প্রচারণায় যুক্ত কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে। এরপর তারা সড়কেও যানবাহন ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ ও যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলের দিকে আসতে থাকলে তারা পালিয়ে যায়।
এদিকে, হামলা-ভাঙচুরের প্রতিবাদে লালখান বাজার মোড় থেকে ওয়াসার মোড় পর্যন্ত সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা স্লোগান দিয়ে হামলাকারীদের বিচার দাবি করেন।
লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুম বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা আমাদের নৌকার প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা করেছে। তারা ফ্লাইওভারের ওপরে এবং নিচে অবস্থান নিয়ে একযোগে হামলা করেছে। খবর পেয়ে আমরা নেতাকর্মীদের নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। এরপর তাদের প্রতিহত করেছি।
নৌকার প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু বলেন, বিকেলে আমার নেতাকর্মীরা নির্বাচনী ক্যাম্পে বসেছিলেন। তখন বিএনপির কর্মীরা তাদের দলীয় কর্মসূচি শেষ করে ফেরার পথে আমার নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলা ও ভাঙচুর চালায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন বলেন, আমরা কোথাও কোনো ধরনের ভাঙচুর করিনি। আমাদের কর্মসূচি শেষ হয়েছে দেওয়ান হাট মোড়ে। আমাদের কর্মীরা ওয়াসার মোড় দিয়ে ফিরে যাবে কেন?
এদিকে হামলা-ভাংচুরের প্রতিবাদে লালখান বাজার মোড় থেকে ওয়াসার মোড় পর্যন্ত সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা স্লোগান দিয়ে হামলাকারীদের বিচার দাবি করেন।
সন্ধ্যা ৬টার দিকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নগরীর নুর আহমদ সড়কে নাসিমন ভবনে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের দিকে এগোতে থাকে। এরপর তারা মিছিল নিয়ে নাসিমন ভবনে গিয়ে বিএনপির কার্যালয়ে ভাঙচুর চালান। এ সময় বিএনপি কার্যালয়ে কোনো নেতাকর্মী ছিলেন না।
নগর বিএনপির দপ্তর বিভাগের ইদ্রিস আলী বলেন, সন্ধ্যা ৬টার দিকে আওয়ামী লীগের লোকজন এসে আচমকা আমাদের নগর বিএনপি কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর করেছে। ঘটনার পর তারা মিছিল নিয়ে চলে যায়।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের দক্ষিণ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর তাদের নেতৃবৃন্দ ওয়াসার মোড়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর নির্বাচন অফিসে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে বলে জানতে পেরেছি। যার ফলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরবর্তীতে আমরা ফোর্স পাঠিয়ে উভয়পক্ষকে নিবৃত করেছি।
এ বিষয়ে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির বলেন, বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ছাত্রলীগ অবস্থান নিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।