
ঘোষণা ডেস্ক : জামালপুরে সাংবাদিক গোলাম রব্বানি নাদিম হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার বকশীগঞ্জ উপজেলার ৪ নম্বর সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এ বিষয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার (২০ জুন) প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। স্থানীয় সরকার বিভাগের জনসংযোগ কর্মকর্তা হেমায়েত হোসেন টিপু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, এ-সংক্রান্ত এক নথিতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম সোমবার (১৯ জুন) স্বাক্ষর করেছেন।
হেমায়েত হোসেন টিপু জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় স্থানীয় সরকার বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে চূড়ান্তভাবে কেন অপসারণ করা হবে না মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানোরও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। চিঠি পাওয়ার ১০ কার্যদিবসের মধ্যে ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে জবাব দিতে বলা হবে।
বুধবার (১৪ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বকশীগঞ্জ পৌরসভার পাটহাটি এলাকায় হামলার শিকার হন বাংলানিউজের জেলা প্রতিনিধি গোলাম রব্বানি নাদিম। সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর নেতৃত্বে ১০-১২ জন হামলা করেন।
পরে স্থানীয় এক সাংবাদিকসহ কয়েকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। রাত দেড়টার দিকে জামালপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঘটনার দিন নাদিম ও স্থানীয় সাংবাদিক আল মুজাহিদ কাজ শেষে আলাদা মোটরসাইকেলে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। তারা পাশাপাশি মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন। পাটহাটি মোড়েই নাদিমকে মোটরসাইকেল থেকে টেনেহিঁচড়ে নামায় বাবুর ক্যাডাররা।
আল মুজাহিদ বলেন, ‘চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে টেনেহিঁচড়ে নাদিমকে নামানো হয়। তাকে উপর্যুপরি কিল-ঘুষি দিতে দিতে অন্ধকার টিঅ্যান্ডটি সড়কে নিয়ে যায় তারা। সেখানে অবস্থান করছিল আরো ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী। সবাই মিলে যে যেভাবে পারছিল, নাদিমকে পেটাচ্ছিল। আর দূর থেকে নির্দেশনা দিচ্ছিলেন মূল অভিযুক্ত বাবু। একপর্যায়ে বাবুর ছেলে রিফাত লাথি মেরে পাশে থাকা একটি দেয়ালের ইট ভাঙেন। চেয়ারম্যানের ছেলে সেই ইট হাতে নিয়ে নাদিমের মাথায় আঘাত করেন।’
নাদিম হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত শনিবার (১৭ জুন) চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে পঞ্চগড়ে ভারত সীমান্তের একটি গ্রাম থেকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
রবিবার (১৮ জুন) দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে জামালপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর আহমেদ তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. ইউসুফ আলী গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, রাষ্ট্রপক্ষ প্রত্যেক আসামির ৭ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেছিল। শুনানি শেষে আদালত প্রধান আসামি মাহমুদুল আলম বাবুর ৫ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রেজাউল ও মনিরুলের ৪ দিন এবং জাকিরুলের ৩ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।