ঘোষণা ডেস্ক :ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাসের পর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত সারা দেশে এ আইনে ৭ হাজার ১টি মামলা দায়ের হয়েছে। সোমবার(৫ জুন) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে লিখিত প্রশ্নের উত্তরে এ তথ্য জানান আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান তার প্রশ্নে ডিজিটাল মামলা আইনে মামলা ও গ্রেপ্তারের সংখ্যা জানতে চান। জবাবে আইনমন্ত্রী আরো জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এ পর্যন্ত কত জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সংক্রান্ত প্রশ্নের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সংশ্লিষ্টতা থাকায় ওই অংশ সচিবালয় নির্দেশমালা ২০১৪ এর অনুচ্ছেদ ২১৩(২) অনুযায়ী জননিরাপত্তা বিভাগে স্থানান্তর করা হয়েছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পাস হয় এবং ওই বছর ৮ অক্টোবর থেকে আইনটি কার্যকর হয়। এর তিন দিনের মাথায় ১১ অক্টোবর প্রথম এই আইনের অধীনে মামলা দায়ের হয়।
সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী জানান, বর্তমানে বাংলাদেশের অধস্তন আদালতগুলোতে চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ৩৬ লাখ ৭০ হাজার ৬৭০টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এর মধ্যে দেওয়ানি মামলার সংখ্যা ১৫ লাখ ৮৪ হাজার ১৬০টি এবং ফৌজদারি মামলা ২০ লাখ ৮৬ হাজার ৫১০টি।
তিনি জানান, দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ঢাকায় সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ ৪৪ হাজার ৩৩ মামলা চলমান রয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চট্টগ্রামে দুই লাখ ৭১ হাজার ৬০৬ এবং সর্বনিম্ন খাগড়াছড়িতে ছয় হাজার ৬৩০টি মামলা চলমান রয়েছে।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, বর্তমান সরকার বিচারপ্রার্থী জনগণের ভোগান্তি লাঘবের জন্য একটি আধুনিক বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলে সারা দেশে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা একটি সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসবে এবং মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে কার্যকর ও দৃশ্যমান উন্নয়ন সাধিত হবে।
৪টি মোবাইল ফোন কম্পানিকে দুই হাজার ৫০০ কোটি টাকা সরকারের অনাদায়ি রাজস্ব সরকারকে দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন বলে জানান আইনমন্ত্রী। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের প্রশ্নের লিখিত উত্তরে তিনি আরো জানান, সরকারের রাজস্ব সংক্রান্ত পাওনা আদায়ের মামলাসমূহ নিস্পত্তির লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্ট অগ্রাধিকার প্রদান করছে।
যে সকল রিট মামলার কারণে সরকারের বিশাল পরিমাণ রাজস্ব আদায় ব্যাহত হচ্ছে প্রধান বিচারপতির নির্দেশনাক্রমে উক্ত রিট বেঞ্চসমূহ এ ধরনের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। আপিল বিভাগ গত জানুয়ারি মাসে মোট ৯টি মামলা একত্রে শুনানি করে একটি রায়ের মাধ্যমে গ্রামীণফোনকে এক হাজার ১৬৩ কোটি, রবি আজিয়াটা ৬৬৫ কোটি ও এয়ারটেলকে ৫০ কোটি এবং বাংলালিংককে ৬২৫ কোটি টাকা সরকারের অনাদায়ি রাজস্ব বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন তথা সরকারকে প্রদানের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। বিগত বছরে সুপ্রিম কোর্ট রাজস্ব সংক্রান্ত উল্লেখযোগ্য পরিমাণ মামলা নিষ্পত্তির কারণে সরকারের বিপুল অঙ্কের রাজস্ব আদায় হয়েছে বলেও জানান তিনি।