শিরোনাম
Home / জাতীয় / পহেলা বৈশাখে শান্তিময় পৃথিবীর প্রত্যাশায় মঙ্গল শোভাযাত্রা

পহেলা বৈশাখে শান্তিময় পৃথিবীর প্রত্যাশায় মঙ্গল শোভাযাত্রা

শান্তিময় পৃথিবীর প্রত্যাশায় বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রা। বাহারি রঙের পাঞ্জাবি ও শাড়ি পরে এতে যোগ দিতে দেখা গিয়েছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে।

শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৯টায় শোভাযাত্রাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড় ঘুরে আবার চারুকলায় এসে শেষ হয়।

ইউনেস্কো কর্তৃক ‘মানবতার স্পর্শাতীত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’ হিসেবে ঘোষিত মঙ্গল শোভাযাত্রার এবারের স্লোগান ছিল ‘বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি’।

এই আয়োজনকে সফল করতে আগে থেকেই সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিল আয়োজকরা। সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শুরু হয় মঙ্গল শোভাযাত্রাটি। নানা বয়সী ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ এই শোভাযাত্রায় অংশ নেয়। শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে তারা শান্তিময় পৃথিবীর প্রত্যাশায় বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানায়।

এর আগে, ভোরের নতুন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে আহির ভৈরব সুরে সারেঙ্গি বাদনের মধ্য দিয়ে রাজধানীর রমনার বটমূলে শুরু হয় ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই যাত্রা শুরু হয় নতুন আরেকটি বাংলা বছরের। সঙ্কীর্ণতা, কূপমণ্ডুকতা পরিহার করে উদারনৈতিক জীবন-ব্যবস্থা গড়তে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি নতুন উদ্যমে বাঁচার অনুপ্রেরণা দেয় পহেলা বৈশাখ।

এদিকে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান ঘিরে রমনা উদ্যান ও এর আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবস্থান জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া ছায়ানট কর্মীদের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী, লাউড ওয়ার্কস ও থার্টিনথ হুসার্স ওপেন রোভার গ্রুপের নির্বাচিত সদস্যরা কাজ করছেন।

বাঙালির বর্ষবরণে অন্যতম অনুষঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজন করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুদান ও চারুকলার শিক্ষার্থীদের ফান্ড রাইজিংয়ের ওপর নির্ভর করে। গত ১৯ মার্চ থেকে ফান্ড রাইজিং ক্যাম্পেইন শুরু হয়। প্রথম দিকে রমজানের কারণে আয়োজনের পরিসর ছোট করার পরিকল্পনা থাকলেও শেষে প্রত্যাশার চেয়ে ভালো হচ্ছে বলে জানান আয়োজকরা।

বৈশাখী উদযাপনের ইতিহাস কয়েকশ বছরের পুরনো হলেও মঙ্গল শোভাযাত্রার ইতিহাস খুব বেশি পুরনো নয়। মঙ্গল শোভাযাত্রা প্রথম শুরু হয়েছিল ১৯৮৫ সালের পহেলা বৈশাখে যশোরে। তখন দেশে ছিল সামরিক শাসন। উদ্দেশ্য ছিল দেশের লোকজ সংস্কৃতি উপস্থাপনের মাধ্যমে সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করা। আর সেই শোভাযাত্রায় অশুভের বিনাশ কামনা করে শুভশক্তির আগমনের প্রার্থনা করা হয়। এর উদ্যোগ নিয়েছিলেন চারুশিল্পী মাহবুব জামাল শামিম।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনষ্টিটিউট থেকে পড়াশোনা শেষ করে যশোরে চলে যান তিনি। যশোরে গিয়ে চারুপিঠ নামে একটি প্রতিষ্ঠান শুরু করেছিলেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত যশোরে সীমাবদ্ধ থাকেনি মঙ্গল শোভাযাত্রা।

১৯৮৯ সালে পহেলা বৈশাখে ঢাকার চারুকলা থেকেও শুরু হয় এই মঙ্গল শোভাযাত্রা। শুরুতে এর নাম ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’ ছিল। তৎকালীন রাজনৈতিক অবস্থাকে মাথায় রেখেই এমনটা করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে এটি ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ হিসেবেই পরিচিত হয়। সেই শোভাযাত্রার মূলভাব ছিল অগণতান্ত্রিক শক্তির বিনাশ।

উল্লেখ্য, পহেলা বৈশাখ বাঙালির একটি সর্বজনীন লোকউৎসব। এদিন আনন্দঘন পরিবেশে বরণ করে নেওয়া হয় নতুন বছরকে। কল্যাণ ও নতুন জীবনের প্রতীক হলো নববর্ষ। অতীতের ভুলত্রুটি ও ব্যর্থতার গ্লানি ভুলে নতুন করে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় উদযাপিত হয় নববর্ষ।

Check Also

বিচারবহির্ভূূত ঘটনা এড়াতে সাবেক মন্ত্রী এমপিদের আশ্রয় : সেনাপ্রধান

ঘোষণা ডেস্ক :সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে যাতে বিচারবহির্ভূূত কোনো ঘটনা না ঘটে, …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *