আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে গুলিস্তান, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ও কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অগ্নিসংযোগের ঘটনা বিএনপি ঘটিয়েছে কি না, সরকার তা খতিয়ে দেখছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (৫ এপ্রিল) সকালে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে মহানগর, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাদের এক যৌথ সভায় এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন দেশের কাজে বাইরে, ঠিক সেই সময় দেশে কয়েকটি অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে গেছে। এটা স্বাভাবিক দুর্ঘটনা, নাকি নাশকতা, সেটা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সরকারের পক্ষ থেকে গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ নিয়ে কারও মাথাব্যথার প্রয়োজন নেই।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিবৃতির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মির্জা ফখরুল হুট করে একটা বিবৃতি দিয়েছেন। তাঁর বিবৃতিতে এ ধরনের একের পর এক ঘটনা রহস্যজনক বলা হয়েছে। আমরাও তাঁর সঙ্গে একমত। এই সময়ে দেশে এ ধরনের ঘটনা রহস্যজনক। এই রহস্যের ভেতরের বিষয়টি কী , সেটা আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘যারা আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েছে, তারা নাশকতার পথ খুঁজছে কি না, নাশকতার পথে হাঁটছে কি না, সেটাও আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে। এসব রহস্যজনক ঘটনার পেছনে কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা বা দলের সংশ্লিষ্টতা আছে কি না, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও বলেছেন, বিষয়টি তারা সিরিয়াসলি খতিয়ে দেখছেন।’
ঢাকার সিদ্দিকবাজার, চট্টগ্রামে সীতাকুণ্ড, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ হলে আগুন–সন্ত্রাসে লিপ্ত হয়। এই ব্যাপারে আমরা সতর্ক আছি।’
আওয়ামী লীগের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে
আওয়ামী লীগের চলমান শান্তিসমাবেশসহ নানা কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিরোধী দল বলছে আমরা পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দিচ্ছি। কিন্তু আমরা তা করছি না, আমরা শান্তিসমাবেশ করছি। বিএনপির অশান্তির আশঙ্কায় এ সমাবেশ করছি। তারা অশান্তি সৃষ্টি করতে পারে। সে জন্য সরকারে থাকায় জনগণের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্ব আমাদের। আমরা জনগণের পাশে আছি।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ২০১৩-১৪ সালে বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে আগুন–সন্ত্রাসে মেতে ওঠে। সে সময় তারা ভাঙচুর অগ্নিসন্ত্রাস করেছে। পুড়িয়ে মানুষ মেরেছে। তিনি আরও বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমরা নিজেরা সতর্ক আছি, দেশবাসী ও জনগণকে আমরা সতর্ক করছি।’
রাদওয়ান মুজিবের শ্রদ্ধা নিবেদন নিয়ে নানা আলোচনার জবাবে
৭ মার্চে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির শ্রদ্ধা নিবেদনে প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা দেশে নেই। ঐতিহাসিক সাতই মার্চ আমাদের ইতিহাসে একটা গুরুত্বপূর্ণ দিবস। প্রধানমন্ত্রীর হয়ে এদিন পরিবারের পক্ষ থেকে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ফুল দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী দেশে ছিলেন না, কিন্তু দিনটা কতটা গুরুত্ব দেন, এটা তারই প্রমাণ। এর সঙ্গে রাজনৈতিক সক্রিয়তার কোনো বিষয় আছে বলে আমার জানা নেই।’
যৌথ সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আবদুর রহমান, কামরুল ইসলাম; দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম; সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন; বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক সেলিম মাহমুদ প্রমুখ।
এ ছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান, কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক উন্মে কুলসুম, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ প্রমুখ।