দেশের স্বাধীনতা এক ব্যক্তি, এক পরিবার, এক গোষ্ঠী ও দলের হাতে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘আজ দেশের স্বাধীনতাকে একটি পরিবার নিজেদের মূলধন করে ফেলেছে।’
রোববার(২৬ মার্চ) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে বীর মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু এ কথা বলেন। বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ চট্টগ্রাম নগর শাখা এটির আয়োজন করে।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতি যে পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে, তাতে স্বাধীনতা দিবসের গর্বিত দিনটিকে, গর্বিত কাজটিকে গর্হিত করা হচ্ছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রেক্ষাপট আমরা ভুলে যাচ্ছি। এ প্রেক্ষাপটের মধ্যে মাওলানা ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, কর্নেল ওসমানি, জিয়াউর রহমান আছেন। আরও অনেকের অবদান আছে।’
আমীর খসরু বলেন, ‘কোনো জায়গায় কোনো নেতৃত্বে, এমনকি স্বাধীনতাযুদ্ধে একজন জাতির পিতা বা ফাউন্ডার ফাদার অথবা কোনো একজনের ব্যক্তিত্বে, একজনের কারণে স্বাধীনতা আসেনি। এটা যদি করা হয়ে থাকে, অর্থাৎ একজনকে সামনে রেখে সব স্বাধীনতার যুদ্ধ, তবে এটা মনোপলি (একচেটিয়া) হয়। যখন স্বাধীনতা মনোপলি হবে, তখন এটা ক্ষতিকর। বাজার যে রকম একচেটিয়া হলে ক্ষতিকর হয়, খদ্দেররা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারেও মনোপলি করতে গিয়ে দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে একটি বিভ্রান্তির সৃষ্টি করা হয়েছে।’
জিয়াউর রহমান দেশের প্রথম বীর মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে আমির খসরু বলেন, ‘আমেরিকায় তো ফাদার অব নেশন আছে, ফাউন্ডিং ফাদারও আছেন। যাঁদের কথা আমি বলেছি, তাঁদের বাইরেও অনেকেই আছেন। যাঁদের নাম ফাউন্ডিং ফাদার হিসেবে আমাদের স্বীকৃতি দিতে হবে। তাঁরা সবাই ফাউন্ডিং ফাদার্স। কারও ভূমিকা কম নয়। একেকজনের ভূমিকা একেক।’
জিয়াউর রহমানের ভূমিকা হচ্ছে, প্রথম স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি দেশের প্রথম বীর মুক্তিযোদ্ধা, উনি কি ফাউন্ডিং ফাদার হতে পারেন না—প্রশ্ন করে আমীর খসরু বলেন, ‘জেনারেল ওসমানি মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন। উনি কি ফাউন্ডিং ফাদার হতে পারেন না? তাজউদ্দিন স্বাধীনতাকালীন মন্ত্রিসভার নেতৃত্ব দিয়েছেন, তিনি কি ফাউন্ডিং ফাদার হতে পারেন না? মুক্তিযুদ্ধ ইনক্লুসিভ (অন্তর্ভুক্তিমূলক) বিষয়। এটি কোনো একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর হতে পারে না। এটি পুরো জাতির গর্ব। এই মূলধন পুরো জাতির মূলধন। এ গর্ব পুরো জাতির গর্ব।’
বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ চট্টগ্রামের সদস্যসচিব খুরশীদ জামিল চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, পরিষদের আহ্বায়ক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সদস্য সচিব কাদের গণি, পরিষদের চট্টগ্রামের আহ্বায়ক জাহিদুল করিম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন, সদস্য সচিব আবুল হাশেম ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান।