চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে বন্দরনগরীর আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডের সম্মেলন শুরু হয়েছে স্কুল মাঠে; যখন সেখানে ক্লাস চলছিল।
সোমবার (২০ মার্চ) বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে নগরীর আন্দরকিল্লা নজির আহমদ চৌধুরী সড়কে মুসলিম এডুকেশন সোসাইটি (এমইএস) উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ৩২ নম্বর আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডের সম্মেলন শুরু হয়। এর আগে সকাল ১০টা থেকে নেতাকর্মীরা স্কুলের মাঠে সম্মেলনের জন্য বানানো প্যান্ডেলে এসে সমবেত হতে থাকেন।
বেলা ১১টা ১৫ মিনিটের দিকে নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী সম্মেলনস্থলে এসে উপস্থিত হন।
এরপর ব্যান্ড দলের বাদকরা বিভিন্ন গানের সুরে বাজনা বাজাতে থাকেন। এমইএস স্কুলের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার শ্রেণিকক্ষে তখন ক্লাস চলছিল।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাঠে আসেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন। ব্যান্ড বাজিয়ে মূল ফটক থেকে ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা তাকে বরণ করে নেন। স্কুলের মূল ফটকের বিপরীত পাশেই সাবেক মেয়র নাছিরের পৈত্রিক নিবাস।
এরপর স্কুল ভবনের সামনে স্থাপিত উদ্বোধনী মঞ্চে হাজির হন নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাংগঠনিক সম্পাদক হাছান মাহমুদ হাছনীসহ নেতারা।
লাগোয়া স্কুল ভবনের তৃতীয় তলা থেকে ঝোলানো হয়েছে ওয়ার্ডের সম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী ইকবাল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আশীষ ভট্টাচার্য্যের ব্যানার।
যখন জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা তুলে এবং বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করা হচ্ছিল, তখন স্কুলটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে কয়েকজন ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে তা দেখছিল।
উদ্বোধনী পর্ব শেষে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনের কার্যক্রম শুরু হয় স্কুল মাঠে স্থাপিত প্যান্ডেলে। বেলা পৌনে ২টার দিকে প্রথম অধিবেশন শেষ হয়। মধ্যাহ্ন বিরতির পর বিকেলে আবার সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হবে। তাতে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে।
প্রায় ২০ বছর পর এই ওয়ার্ডের সম্মেলন হচ্ছে। যদিও প্রয়াত নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারীদের ছাড়াই সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে অভিযোগ তুলে ওই পক্ষের নেতাকর্মীরা একই সময় জেলা পরিষদ চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ করছিল।
সম্মেলন উদ্বোধনের জন্য নগর কমিটির সহ-সভাপতি জহিরুল আলম দোভাষের নাম ব্যানারে থাকলেও তিনি অনুষ্ঠানে আসেননি।
সম্মেলন চলাকালে জেলা পরিষদ চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশে থাকা আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও নগর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক জহর লাল হাজারী বলেন, “আজকে কোনো সরকারি ছুটি নেই। স্কুল চলাকালে সেখানে সম্মেলন হচ্ছে। সেখানে যে স্কুলের মাঠ ব্যবহার করছে সেটার সাথে আমরা কেউ জড়িত নই।”
এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী আশীষ ভট্টাচার্য্য বলেন, “স্কুলের ক্লাস চলছে। আমরা সম্মেলন দেরিতে শুরু করেছি। তখন তাদের টিফিন পিরিয়ড ছিল। সম্মেলনের কারণে স্কুলের কোনো সমস্যা হয়নি।”
এ বিষয়ে জানতে এমইএস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জুলফিকার হায়দার চৌধুরীকে একাধিকার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। স্কুলের অন্য শিক্ষকরাও বিষয়টি নিয়ে নাম প্রকাশ করে কথা বলতে চাননি।