নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রবাসীদের রেমিট্যান্সের টাকায় দেশের অর্থনীতির চাকা গতিশীল হলেও কিছু প্রবাসী নিজ দেশের কতিপয় প্রতারকদের প্রতারণার শিকার হয়ে নিঃস্ব অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করতেছেন। এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবীতে। মোহাম্মদ কামাল উদ্দীন চৌধুরী এবং তার স্ত্রী জাহানারা বেগম ডেইজির প্রতারণায় মোহাম্মদ সেকেন্দার, মোহাম্মদ মহসীন ছিদ্দিকী এবং আবদুল মোনাফ নিঃস্ব হয়ে গেছেন। এই ৩ প্রবাসীর কষ্টার্জিত বিভিন্ন ব্যবসায় বিনিয়োগকৃত সব টাকা কামাল-ডেইজি দম্পতি আত্মসাৎ করেছেন মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর বাসিন্দা মোহাম্মদ সেকেন্দার, মোহাম্মদ মহসীন ছিদ্দিকী এবং রাঙ্গুনিয়ার বাসিন্দা আবদুল মোনাফ জীবীকার তাগিদে একত্রে আবুদাবীতে থাকেন। তারা আবাসিক কোয়ার্টার করার জন্য তাদের নিকটাত্মীয় মোহাম্মদ কামাল উদ্দীন চৌধুরী এবং তার স্ত্রী জাহানারা বেগম ডেইজির নিকট থেকে মাসিক ১ লক্ষ ৪০ হাজার দেরহাম (বাংলাদেশের টাকায় প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা) দিয়ে ২টি ভবন ভাড়া নেন। ১টি ভবন আলাইনে যেটির মালিক খলিফা ছালেম এবং অপরটি জেবলতেবলে অবস্থিত, যেটির মালিক মোহাম্মদ মাহবুব । আলাইনে অবস্থিত ভবনের ভাড়া ৮৪ হাজার দেরহাম এবং জেবলতেবলে অবস্থিত ভবনের ভাড়া ৫৬ হাজার দেরহাম নির্ধারণ করা হয়। উভয় পক্ষ নিকটাত্মীয় হওয়ায় মৌখিক চুক্তিতে ১ মাসের ভাড়া বাবদ নির্ধারিত ১ লক্ষ ৪০ হাজার দেরহাম কামাল উদ্দীন এবং জাহানারা বেগম ডেইজির হাতে এককালীন দেওয়ার পর বিল্ডিং ২টি বুঝিয়ে না দিয়ে নানা টালবাহানা শুরু করে তারা। পরবর্তীতে ভাড়া গ্রহীতারা জানতে পারেন তাদের সাথে প্রতারণা করে বিল্ডিং ২ টি অন্য ব্যক্তির নিকট ভাড়া দিয়েছেন কামাল- ডেইজি দম্পতি। এই ঘটনায় সেকান্দার, মহসীন এবং মোনাফের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। জীবনের সব সঞ্চয় হারিয়ে উল্টো ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে হতাশ হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় দেশে ফেরার মতো অর্থও তাদের হাতে নেই।
পরবর্তীতে কামাল -ডেইজি দম্পতির নিকট প্রদানকৃত টাকা ফেরত চাইলে টাকাগুলো দ্রুত ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিলেও আজকাল করে সময় ক্ষেপণ করতে থাকে। বর্তমানে কামাল এবং তাঁর স্ত্রী ডেইজি বাংলাদেশে এসে নিজ বাড়ীতে (চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বি-ব্লক ৯ নং রোডের ২৩৩ নং বাড়ী) রয়েছেন।
এই ঘটনায় গত ২৭/০৬/২০২২ ইং তারিখে প্রতারিতদের পক্ষে প্রতারক ডেইজির নিকট লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করেন ক্ষমতাপ্রাপ্ত মু: মনছুর আলী। এছাড়া চসিক ৪ নং ওয়ার্ড( চান্দগাঁও) কাউন্সিলরের নিকট অভিযোগ প্রদান করলে ডেইজি হাজির হয়ে সময় চাইলেও পরবর্তীতে আর যোগাযোগ করেন নি।
এই ব্যাপারে ক্ষমতাপ্রাপ্ত মু: মনছুর আলী বলেন, মোহাম্মদ কামাল উদ্দীন অনেক বড় একজন প্রতারক। তার স্ত্রী ডেইজি স্বামীর অপকর্মের সহযোগী। প্রতারণার টাকায় তারা চান্দগাঁও আবাসিক এলাকায় ভবন নির্মাণ করেছেন। তাদের প্রতারণায় সেকান্দার, মহসীন এবং মোনাফ নিঃস্ব হয়েছেন। তাদের পরিবারের সদস্যরা অনাহারে এবং অর্ধহারে দিনযাপন করতেছেন। প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ এই প্রতারকদেরকে আইনের আওতায় এনে যেন আত্মসাৎকৃত টাকা আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়।
ঘটনার ব্যাপারে জানতে জাহানারা বেগম ডেইজির সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।