ঘোষণা ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে এসেছি, দেশের মানুষের ভাগ্য গড়ার জন্য এসেছি, নিজের ভাগ্য গড়ার জন্য নয়। আমার দেশের অর্থ অন্যকে দিয়ে সেখান থেকে দুর্নীতি করব, এই মানসিকতা আমাদের নেই। এই শিক্ষা বাবা-মা আমাদের দেয়নি।
রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারী) সকালে কালশী বালুর মাঠে মিরপুর-কালশী ফ্লাইওভারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে ফলক উন্মোচন করে কালশী ফ্লাইওভার ও প্রশস্তকৃত ৬ লেন বিশিষ্ট সড়কের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
এসময় মুক্তিযুদ্ধ এবং দেশের সব গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল আন্দোলনে গৌরবময় অবদান রাখায় কালশী ফ্লাইওভার হারুন মোল্লার নামে নামকরণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সরকার জনগণের কল্যাণের কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ জীব বৈচিত্র্য ও চমৎকার সবুজে ভরা একটি দেশ। ফুল, ফল, পাখির সম্মিলনে সৌন্দর্যে ভরা এই দেশটিকে আমরা সেভাবেই গড়ে তুলব। পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন স্মার্ট বাংলাদেশ আমরা গড়ব এবং ঢাকা সিটিও স্মার্ট সিটি হবে। সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা সেজন্য বহু পদক্ষেপ নিচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা শহরের প্রধান সমস্যা হলো এর পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে ভালো সংযোগ না থাকা। সরকার রাজধানীর এই অংশে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে অগ্রাধিকার দিয়েছে।
তিনি বলেন, ইসিবি স্কয়ার থেকে ২ দশমিক ৩৪ কিলোমিটার কালশী ফ্লাইওভার এবং ৩ দশমিক ৭০ কিলোমিটার ছয় লেনের রাস্তা মিরপুর, ডিওএইচএস, পল্লবী, কালশী, মহাখালী, মানিকদি, মাটিকাটা, ভাষানটেক, বনানী, উত্তরা এবং বিমানবন্দরে যোগাযোগ সহজ করবে। মেট্রোরেলের পর কালশী ফ্লাইওভার ও ছয় লেনের সড়ক চালু হলে ঢাকার যানজট অনেকটাই কমে যাবে।
পদ্মাসেতু নির্মাণের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, পদ্মাসেতু নিমার্ণ একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল। আমাদের ওপর মিথ্যা অপবাদ দিতে চেয়েছিল, এখানে নাকি দুর্নীতি হয়েছে। আমি বলেছিলাম, প্রমাণ করতে হবে দুর্নীতি হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, শহীদ দিবস। মাতৃভাষায় কথার অধিকার অর্জনের জন্য আমার দেশের ছেলেরা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে রক্তের অক্ষরে লিখে দিয়েছিল, মাকে মা বলে ডাকতে চাই। আমি আজকে সেই সকল ভাষা শহীদদের আমার শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।
কালশী বালুর মাঠের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও সুধী সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন এলজিআরডি ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, সেনাপ্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ এবং ঢাকা-১৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা।
মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন এলজিআরডি ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইব্রাহিম।
২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মনোয়ারুল ইসলাম সরদার কালশী ফ্লাইওভার ও ছয় লেনের সড়ক সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত প্রেজেন্টেশন দেন। অনুষ্ঠানে কালশী ফ্লাইওভার ও সড়ক প্রকল্পের একটি ভিডিও ডকুমেন্টারিও প্রদর্শিত হয়।