ঘোষণা ডেস্ক : নির্বাচন ঘিরে বিএনপির ‘অগ্নিসন্ত্রাসের তথ্য-প্রমাণ’ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সিলর ডেরেক এইচ শোলের কাছে তুলে ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
বিএনপি বিদেশিদের কাছে ক্রমাগত ‘নালিশ’ করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ তোলার মধ্যে বুধবার(১৫ ফেব্রুয়ারী) ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের একথা জানান তিনি।
নির্বাচন নিয়ে শোলের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে এক প্রশ্নে মোমেন বলেন, “নির্বাচন নিয়ে তেমন আলাপ হয়নি। কারণ, তারা জানেন যে, সব দেশের নির্বাচনে কিছু অপরিপক্কতা আছে। তবে, আমি নিজে বলতে চেয়েছি নির্বাচন নিয়ে, কারণ আমরা এত কাজ করেছি, স্বচ্ছ ব্যালট বক্স তৈরি করেছি, ভোটার তালিকা ভুয়া না হওয়ার বিষয়ে বলতে চেয়েছি কিন্তু সময় হয় নাই।”
তিনি বলেন, “আমরা ডকুমেন্টারি এভিডেন্স দিয়েছি। আমরা অগ্নিসন্ত্রাসের কাহিনীগুলো বলেছি। দেখিয়েছি যে, দেখেন মহিলা কীভাবে অগ্নিদগ্ধ হয়েছে, বাসের ভেতরে ছিল, সেখানে তাকে মেরে ধ্বংস করে দেওয়া হলো।
“সে কারণে আমরা কোনো সন্ত্রাস চাই না। আমরা কোনো অগ্নিসন্ত্রাস চাই না। আমরা চাই স্মুদ, ফেয়ার, একটা ট্রান্সপারেন্ট আমাদের ইলেকশন প্রসেস। আমরা যখন এই ধরনের জ্বালাও পোড়াও করে কিংবা পুলিশকে মারে, আমরা এগুলো ডকুমেন্টারি এভিডেন্স দিয়েছি।”
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ না জানানো নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে মোমেন বলেন, “আপনি গণতন্ত্র কাকে শিখাইতে আসছেন? এদেশের লোক গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়েছে। ৩০ লাখ লোক গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং ন্যায়বিচারের জন্য রক্ত দিয়েছে। আপনি কাকে শেখাতে চাচ্ছেন গণতন্ত্র?
“এটা আমাদের আলোচনার বিষয় নয়। এ নিয়ে ওরা কিছু বলে নাই। আমেরিকায় তাদের নিয়মে গণতন্ত্র। তারা যাকে ইচ্ছে দাওয়াত দিবে, যাকে ইচ্ছা দাওয়াত দিবে না। দেয়ার ইজ আপ টু দেম। অনেকগুলো দেশ তারা দাওয়াত দেয়, যেগুলোতে গণতন্ত্রের নাম-গন্ধ নেই।”
যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ পাওয়া মিশরের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, “তারা (যুক্তরাষ্ট্র) যাকে ইচ্ছে দেবে। মিশরের মতো দেশ, সেখানে গণতন্ত্র আছে? তারাও দাওয়াত পায়!”
সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আপনার মনে রাখা উচিৎ, বাংলাদেশের গণতন্ত্র দুনিয়ার অন্যান্য যে কোনো দেশের গণতন্ত্রের চেয়ে ভালো। আমেরিকার ৭৭ পারসেন্ট লোক উভয় দলের, ডেমোক্রেট অ্যান্ড রিপাবলিকান, সবাই বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র দুর্বল। ইয়াং আমেরিকানরা ভোট দেয় না। আমাদের সেদিক থেকে ৮০ পারসেন্ট লোক ভোট দেয়।”
যুক্তরাষ্ট্র দ্বিতীয়বারের মতো গণতন্ত্র সম্মেলন আয়োজন করতে যাচ্ছে। দেশটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পাওয়ার পর বাইডেন ২০২১ সালে প্রথম গণতন্ত্র সম্মেলনের আয়োজন করে। সে সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এ বছরের মার্চে অনুষ্ঠেয় সম্মেলনে ইতমধ্যে ১০০-এর বেশি দেশকে আমন্ত্রণ জানালেও তালিকায় নেই বাংলাদেশের নাম।