নিজস্ব প্রতিবেদক :চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে (চসিক) সহকারী প্রকৌশলী পদে পদোন্নতিতে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার(২০ মে) টাইগারপাসে অবস্থিত চসিক কার্যালয়ে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন দুদকের চট্টগ্রাম-১ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাঈদ মুহাম্মদ ইমরান।
অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছেন উপসহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) রূপক চন্দ্র দাশ। জানা যায়, তিনি মৌখিক পরীক্ষায় ফেল করার পরও ২১ এপ্রিল এক অফিস আদেশের মাধ্যমে সহকারী প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি পান। এই আদেশে চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের স্বাক্ষর রয়েছে, যার ফলে পুরো প্রশাসনের স্বচ্ছতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।
চসিক সূত্রে জানা যায়, ৬ মার্চ অনুষ্ঠিত মৌখিক পরীক্ষায় আটজন অংশ নেন। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন মাত্র তিনজন—মু. সরওয়ার আলম খান, জাহাঙ্গীর হোসেন ও ফখরুল ইসলাম। একজন অনুপস্থিত ছিলেন এবং চারজন ফেল করেন। রূপক দাশ তাদের মধ্যেই একজন। অথচ তাকে ফেল করার পরও পদোন্নতি দিয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে সহকারী প্রকৌশলী করা হয়।
ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর চাপে পড়ে চসিক কর্তৃপক্ষ রূপক দাশের পদোন্নতি বাতিল করে। কিন্তু এর আগেই বিষয়টি জনমনে সন্দেহ সৃষ্টি করে এবং নানা মহলে সমালোচনার জন্ম দেয়।
এ অবস্থায় দুদক অভিযানে গিয়ে সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র জব্দ করে এবং মেয়র, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিবের বক্তব্য গ্রহণ করে। সংস্থাটি জানিয়েছে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে কমিশনের কাছে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে এবং প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চসিকের মতো একটি নগর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানে এমন অনিয়ম প্রমাণ করে, পেশাগত যোগ্যতার চেয়ে প্রভাব-প্রতিপত্তির কাছে প্রশাসনিক শুদ্ধতা আজ কতটা দুর্বল। দুর্নীতি দমন কমিশনের হস্তক্ষেপে যদি সত্যিই দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তাহলে অন্তত ভবিষ্যতে প্রশাসনের ভেতরের এই অপচেষ্টা রোধ করা সম্ভব হতে পারে।