ঘোষণা ডেস্ক :উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত ১১টা ৪৬ মিনিটে তাকে বহনকারী রয়েল এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
এর আগে, মঙ্গলবার রাত ৮টা ১০ মিনিটে গুলশানের নিজ বাসভবন ফিরোজা থেকে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর বের হয়। এ সময় তাকে বিদায় জানাতে বিমানবন্দর সড়কে নেতাকর্মীদের ঢল নামে। পথে পথে জড়ো হন হাজারো নেতাকর্মী। এতে গাড়িবহরের গতি মন্থর হয়ে যায়। এ সময় সড়কে প্রবল যানজটও দেখা দেয়। এর প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর রাত ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে গাড়িবহরটি বিমানবন্দরে প্রবেশ করে।
এদিকে, বিশেষ প্রক্রিয়ায় আগেই খালেদা জিয়ার ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা হয়। তবে বিমানবন্দরে দেরিতে পৌঁছানোয় খালেদা জিয়ার ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে যেতে পারেনি। এরপর দুইবার ফ্লাইটের সময় পরিবর্তন করা হয়।
কাতারের আমিরের পাঠানো এই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকা থেকে দোহা হয়ে বুধবার স্থানীয় সময় সকালের দিকে লন্ডনের হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমাবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে। লন্ডনে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবাইদা রহমান তাকে রিসিভ করবেন। এরপর সেখান থেকে সরাসরি খালেদা জিয়াকে লন্ডন ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ৪জন চিকিৎসক ও প্যারামেডিকস রয়েছেন। পাশাপাশি খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের ৬জন সদস্যও রয়েছেন। তারা হলেন, শাহাবুদ্দিন তালুকদার, এফ এম সিদ্দিক, নূরুদ্দিন আহমেদ, জাফর ইকবাল, এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও মোহাম্মদ আল মামুন। এছাড়া খালেদা জিয়ার ছোট ছেলের স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এনামুল হক চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল, খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার এবং দীর্ঘদিনের পরিচর্যাকারী গৃহকর্মী ফাতিমা বেগমসহ ব্যক্তিগত কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুর্নীতির মামলায় ১৭ বছর দণ্ডিত হয়েছিলেন খালেদা জিয়া। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিয়ে যেতে বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার তাতে সায় দেয়নি। ফলে দেশেই চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার অস্ত্রোপচারসহ যাবতীয় চিকিৎসা চলছিল। সবশেষ গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরের দিন খালেদা জিয়াকে নির্বাহী আদেশে মুক্তি দেয়া হয়। এরপর চিকিৎসা নিতে তার বিদেশ যাওয়ার পথ সুগম হয়। কিছুদিন আগে যুক্তরাজ্যের ভিসাও পান তিনি।
উল্লেখ্য, লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।