বিশেষ প্রতিনিধি :চট্টগ্রামের বাকলিয়ায় কোটা আন্দোলনে অংশ নেওয়ার জেরে এক শিক্ষার্থীর বাড়ীতে হামলা চালিয়ে লুটপাট ও কয়েকজনকে গুরুতর আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৯ই আগষ্ট (শুক্রবার) ভোর আনুমানিক ৬টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
মামলাসূত্রে এবং সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়, বাকলিয়া থানাধীন মিয়াখান নগর এলাকার আব্দুল করিম রোডস্থ নাগুর বাড়ীর সরকারি হাজী মোহাম্মদ মুহসিন কলেজ শিক্ষার্থী রিতার পরিবারের উপর এই বর্বর হামলা চালায় একই বাড়ীর ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ জুয়েলের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী। সন্ত্রাসীরা তান্ডব চালিয়ে ২টি টিনশেড ভাড়াঘর ভাংচুর করে। একপর্যায়ে বসতগৃহে ঢুকে আসমা আক্তার ও আব্দুর রহিম বাদশাকে মাথায় ধারালো কিরিচ দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। হামলাকারীরা শিক্ষার্থী রীতাকে খুঁজতে থাকে, তাকে না পেয়ে তার মাকে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে । এসময় তারা আলমিরার দরজা ভেঙে নগদ ২ লক্ষ টাকা ও লক্ষাধিক টাকার স্বর্ণালংকার ছিনতাই করে।
উক্ত ঘটনায় আসমা আক্তার বাদী হয়ে ১২ই আগষ্ট আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালত মামলাটি গ্রহণ করে বাকলিয়া থানার ওসিকে এফআইআর হিসেবে রেকর্ড করার নির্দেশ দিলে ১৬ই আগষ্ট মামলাটি রেকর্ড করা হয়। মামলার আসামিরা হলেন যথাক্রমে মো: জুয়েল, মো: শফি, মো: রিয়াদ এবং মো: রুবেল।
মামলার ৪নং আসামি রুবেল আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার বাদী আসমা আক্তার জানায়, আসামীরা দীর্ঘদিন ধরে তাদেরকে হুমকি-ধমকী প্রদান করে আসতেছিলো। প্রায় সময় চাঁদা দাবি করতো, অন্যথায় জোরপূর্বক ভিটে ভূমি দখলের হুমকি দিতো। এমন হুমকি ধমকীকে কেন্দ্র করে বাকলিয়া থানায় ২টি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরু হলে তাঁর ভাগ্নি রীতা নিয়মিত আন্দোলনে যাওয়ার খবর এলাকায় প্রকাশ হলে সন্ত্রাসী ও কথিত ছাত্রলীগ নেতা জুয়েল একাধিকবার শাসিয়ে যায় এবং এটার পরিণতি ভয়াবহ হবে বলেও হুমকি দিতো। ৫ই আগষ্ট ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী সরকারের পতনের পর আইন শৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার সুযোগে তারা এই বর্বর হামলা চালায়। তাদের উপর এমন মধ্যযুগীয় হামলার সুষ্ঠু বিচার দাবী করেন তিনি।
শিক্ষার্থী রীতা জানায়, ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় তার পরিবারের উপর এই হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। তার ধারণা তাকে হত্যা করতেই এই হামলা চালিয়েছে। আন্দোলনে আসা-যাওয়ার সময় জুয়েল তাকে জানে মারার হুমকি দিতো। মামলার পর তারা আরো ভয়ংকর রূপ ধারণ করতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন এই শিক্ষার্থী।
এলাকাবাসীরা জানায়, এলাকার বেশীরভাগ মানুষ যখন ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলো তখন সন্ত্রাসীরা এই হামলা চালায়। তারা হামলার সময় ভাড়াটিয়াদের দরজা এবং মেইন গেট বন্ধ করে দেয় যাতে কেউ এগিয়ে আসতে না পারেন। এমন বর্বর হামলার দৃষ্টিান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান এলাকাবাসী।