শিরোনাম
Home / আদালত / চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ নেতা লেদু এবং স্ত্রী-সন্তানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ নেতা লেদু এবং স্ত্রী-সন্তানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

বিশেষ প্রতিনিধি :অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুল নবী লেদুর স্ত্রী ও সন্তানের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে দুদক। এরমধ্যে স্ত্রী লাকি আক্তারের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৯ লাখ ১১ হাজার ৩৮৫ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ছেলে আবদুর রহিমের বিরুদ্ধে ১ কোটি ৫ লাখ ৭৪ হাজার ৮৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। বুধবার (১৪ আগস্ট) দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-১ এ মামলা দুটি দায়ের করা হয়। দুদক চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-২ এর সহকারী পরিচালক আব্দুল মালেক বাদী হয়ে পৃথক মামলা দুটি দায়ের করেন। মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদক চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-২ এর উপ-পরিচালক মো. আতিকুল আলম বলেন, কমিশনের নির্দেশে মামলা দুটি দায়ের করা হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালে তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পায় দুদক। প্রাথমিক অনুসন্ধানে তাদের সম্পদ থাকার বিষয়টি প্রমাণ পাওয়ায় ২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল সম্পদ বিবরণী জারি করে দুদক। পরে একই বছরের ২৫ জুন দুদকের কাছে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন আবদুর রহিম। তাতে বাড়ি নির্মাণ ব্যয় ৭৫ লাখ টাকা স্থাবর সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন তিনি। তবে যাচাইকালে ১ কোটি ১৪ লাখ ৮৮৬ টাকা পাওয়া যায়। এখানে ২৫ লাখ ১৪ হাজার ৮৮৬ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করা হয়। এছাড়াও ব্যাংকে থাকা ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা অস্থাবর সম্পদও দুদকের কাছে গোপন করেন আবদুর রহিম। সবমিলিয়ে দুদকের কাছে ২৯ লাখ ৮৪ হাজার ৯৮১ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করা হয়।

অন্যদিকে, দুদকের অনুসন্ধানে তার দায় দেনা বাদে সর্বমোট ১ কোটি ১৮ লাখ ৬৩ হাজার ৫৭০ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পায়। বিপরীতে তার গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ১২ লাখ ৮৮ হাজার ৬৮৩ টাকা। বাকি ১ কোটি ৫ লাখ ৭৪ হাজার ৮৮৭ টাকার সম্পদ তার অর্জিত জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ।

স্ত্রীর লাকি আক্তারের মামলায় তার বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৯ লাখ ১১ হাজার ৩৮৫ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালে তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ পাওয়ায় ২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল লাকি আক্তারের নামে পৃথক সম্পদ বিবরণী জারি করে দুদক। তিনি একই বছরের ৫ জুলাই দুদকের কাছে তার সম্পদের হিসাব জমা দেন। তাতে কোন সম্পদ গোপনের তথ্য পায়নি দুদক। তবে দুদকের অনুসন্ধানে তার নামে ৫ কোটি ২৫ লাখ ১৫ হাজার ৮৫৬ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পায়। বিপরীতে তার গ্রহণযোগ্য আয় ২ কোটি ১৬ লাখ ৪ হাজার ৪৭১ টাকা। বাকি ৩ কোটি ৯ লাখ ১১ হাজার ৩৮৫ টাকার সম্পদ অবৈধভাবে অর্জন করা হয়।

এর আগে মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) আবদুল নবী লেদুর বিরুদ্ধে পৌনে এক কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।  দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করেন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর সহকারী পরিচালক আবদুল মালেক।

মামলায় আসামি লেদুর বিরুদ্ধে ৭৬ লাখ ৬৪ হাজার ২৯১ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অর্জন করে ভোগদখল করা এবং ২৬ লাখ ১৪ হাজার ১২৬ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়। আসামি আবদুল নবী লেদু চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। তিনি বায়েজিদ বোস্তামী থানার অক্সিজেন আবাসিক এলাকার হাজী ভবনের বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে সরকারি ভূমি দখল, বায়েজিদ-অক্সিজেন এলাকায় চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ রয়েছে।

তিনি নিজেকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশ তথ্য ও মানবাধিকার ফাউন্ডেশন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন।

চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর উপ-পরিচালক আতিকুল আলম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

Check Also

কোটা সংস্কার আন্দোলন: প্রাথমিক তদন্তে সম্পৃক্ততা না পেলে মামলা থেকে বাদ

ঘোষণা ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া হত্যা ও অন্য মামলায় আসামিদের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *