শিরোনাম
Home / আদালত / অর্থ উপার্জনে রাজনীতি পেশা হতে পারে না : হাইকোর্ট  

অর্থ উপার্জনে রাজনীতি পেশা হতে পারে না : হাইকোর্ট  

ঘোষণা ডেস্ক :  দুর্নীতি-অর্থপাচার ঠেকানোর লড়াইয়ে জনগণকে সম্পৃক্ত করার পরামর্শ দিয়ে হাইকোর্ট বলেছেন, অন্য কেউ এসে এ লড়াই করে দিবে না বা করে দিতে পারবে না। এ লড়াইয়ের জন্য সমাজের সকল স্তরের জনগণকে অঙ্গীকারাবদ্ধ হতে হবে।

অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপির দণ্ডিত দুই নেতার আপিল খারিজের রায়ে এ পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার(৩০ মে) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

রায়ে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক এমপি আমান উল্লাহ আমানের ১৩ বছর ও তার স্ত্রী সাবেরা আমানের ৩ বছরের সাজা বহাল রাখেন হাইকোর্ট। আরেক মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর ৯ বছরের সাজাও বহাল রাখা হয়। দুটি মামলার রায় এক সঙ্গে ঘোষণা করেন উচ্চ আদালত।

রায়ের পর্যবেক্ষণে রাজনীতি, রাজনীতিবিদদের প্রসঙ্গ উঠে আসে। রায়ে বলা হয়, যারা রাজনীতি করেন তারা যেন টাকা-পয়সা, সম্পত্তির দিকে না ছুটেন। রাজনীতিকরা বিপুল সম্পদের মালিক হলে সে সম্পদ টিকিয়ে রাখার পেছনে তাদের সময় ব্যয় করতে হবে। এর ফলে দেশ-জনগণের কল্যাণে তাদের সময় ব্যয় করার সময় থাকবে না।

রাজনীতি দেশ-জনগণের কল্যাণে ত্যাগ ও নিষ্ঠার কাজ উল্লেখ করে আদালত রায়ে বলেন, ব্যবসা কিংবা অন্য কোনো পেশার মাধ্যমে অর্থ-সম্পদ উপার্জনের অনেক উপায় আছে। কিন্তু অর্থ-সম্পদ উপার্জনে রাজনীতি পেশা হতে পারে না।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ নির্বিশেষে দুর্নীতি সব মানুষের ক্ষতি করে থাকে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে দরিদ্র ও দুর্বল জনগোষ্ঠীর। তাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেশবাসী বিশেষ করে দায়িত্বশীল অংশীজনদের ইতিবাচক উদাহরণ সৃষ্টি করা উচিত।

আর জনগণের উচিত প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও অংশীজনদের সঙ্গে থেকে দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানের পক্ষে দাঁড়ানো। বিশ্বে পরিবর্তন আনতে চাইলে, দেশকে দুর্নীতি-অর্থপাচার মুক্ত করতে চাইলে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। টাকা দিয়ে দুর্নীতিকে পরাজিত করা যাবে না। দুর্নীতিকে পরাজিত করতে হলে দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় আনতে হবে। তার জন্য একটি কার্যকর শক্তিশালী ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। জবাবদিহি চাওয়ার এবং আইনের বিধান মানার ব্যবস্থা করতে হবে।

শৈশব থেকেই সততা-অসততার পার্থক্য শেখানোর পরামর্শ দিয়ে রায়ে বলা হয়, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সমালোচকদের মুখ বন্ধ করতে এবং চুরি করা অর্থ-সম্পদ নিজেদের করে নিতে দুর্নীতিবাজরা একে অপরকে সহযোগিতা করে। এসব দুর্নীতিবাজদের এবং তাদের হয়ে যারা কাজ করে, তাদের মুখোশ উন্মোচনের সময় এসেছে। পরিবর্তনের অপেক্ষায় বসে থাকলে চলবে না। সবাইকে পরিবর্তনের অংশ হতে হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে নিজেদেরই লড়াই করতে হবে। অন্য কেউ এসে এ লড়াই করে দিবে না বা করে দিতে পারবে না। এ লড়াইয়ের জন্য সমাজের সব স্তরের সবাইকে অঙ্গীকারাবদ্ধ হতে হবে।

আর দুর্নীতি একটি বৈশ্বিক সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করে রায়ে আদালত বলেন, এ লড়াইয়ের লক্ষ হবে বিশ্ব তথা বাংলাদেশে দুর্নীতির অবসান ঘটানো। আমরা জানি এ লড়াই কঠিন। তবে এ লড়াইয়ে জনগণকে ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত করতে পারলে সমাজ থেকে দুর্নীতির মূলোৎপাটন করা সম্ভব।

Check Also

যেভাবে ধরা পড়ল শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ

ঘোষণা ডেস্ক :চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ ওরফে বুড়ির নাতি। কথায় কথায় গুলি ছোড়ার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *