এম.জিয়াউল হক: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ‘সীমা অক্সিজেন অক্সিকো লিমিটেড’র প্ল্যান্টে বিস্ফোরণে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এমন মর্মান্তিক ঘটনায় কারখানার মালিকপক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। এমনকি উদ্ধার অভিযানে সহায়তা তো দূরে থাক তথ্য দেয়ার জন্যও ঘটনাস্থলে মালিক পক্ষের কেউ আসেননি।
শনিবার (৪ মার্চ) দিবাগত রাত ১১টার দিকে চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক (ডিডি) মো. আব্দুল হালিম সংবাদমাধ্যমকে এমনই তথ্য জানান।
মো. আব্দুল হালিম বলেন, আমরা এখনো ঘটনাস্থলে রয়েছি। উদ্ধার অভিযান চলমান আছে। রাতে যেহেতু অন্ধকার, সেহেতু উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত করা হবে না। আমরা এখন পর্যন্ত মালিকপক্ষের কাউকে পাইনি। তারা কেউ দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে আসেননি।
বিস্ফোরণের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, কারখানাটিতে অক্সিজেন উৎপাদন করা হয় এবং সিলিন্ডার রিফিল করা হয়। দুটি কারণে বিস্ফোরণ হতে পারে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে যান্ত্রিক ত্রুটি। ব্যবস্থাপনার কারণেও দুর্ঘটনা হতে পারে। তদন্ত শেষে স্পষ্ট করে বলা যাবে।
শনিবার (৪ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার কদমরসুল এলাকায় ‘সীমা অক্সিজেন অক্সিকো লিমিটেড’ নামের কারখানায় এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
সীতাকুণ্ড উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহাদৎ হোসেন বিস্ফোরণে ছয়জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ ছাড়া ৩০ জনকে দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। হতাহতদের অনেকের হাত-পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তাদের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, বড় সিলিন্ডার থেকে ছোট সিলিন্ডারে ভরা হচ্ছিল অক্সিজেন। এসময় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে বেশ কয়েকটি সিলিন্ডারে। মুহূর্তেই চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে আগুন। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয় আগ্রাবাদ, কুমিরা ও সীতাকুণ্ড স্টেশনের তিনটি ইউনিট। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় আরও ছয়টি ইউনিট। প্রায় ২ ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি, পুড়ে ছাই হয়ে গেছে সব।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক আবদুল মালেক বলেন, বড় সিলিন্ডার থেকে যখন ছোট সিলিন্ডারে অক্সিজেন ভরা হচ্ছিল, তখন অতিরিক্ত প্রেসারের কারণে বিস্ফোরণ হয়েছে। অথবা সিলিন্ডারের মেয়াদও শেষ হয়ে যেতে পারে। তদন্ত ছাড়া এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।